বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

আস্থা ভোটে হেরে কুর্সি খুইয়ে ইসলামাবাদ ছাড়লেন ইমরান! গড়লেন এই রেকর্ড

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২২, ১১:০৭ এএম | আপডেট: এপ্রিল ১০, ২০২২, ০৫:০৭ পিএম

আস্থা ভোটে হেরে কুর্সি খুইয়ে ইসলামাবাদ ছাড়লেন ইমরান! গড়লেন এই রেকর্ড
আস্থা ভোটে হেরে কুর্সি খুইয়ে ইসলামাবাদ ছাড়লেন ইমরান! গড়লেন এই রেকর্ড / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলেন না। টানা কয়েকদিন ধরে টানাপোড়েনের পর শনিবারই মাঝরাতে নাটকের সমাপ্তি হল। অবশেষে গদিচ্যুত হলেন ইমরান খান। সেই সঙ্গে পাকিস্তানে পতন হল ইমরান খানের সরকারের। পাক সংসদে ১৭৪ জন সাংসদ ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেন। আগের সব সরকারের মতোই ৫ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পারলেন না ইমরান খান তথা প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়ক। যে গর্বের সঙ্গে ক্রিকেট মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন, শনিবার ততোটাই অগৌরবের সঙ্গে তিনি পাক প্রধানমন্ত্রীর সিংহাসন ছাড়লেন। এখানেই শেষ নয়, রাতের অন্ধকারেই তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও রাজধানী ছাড়তে হয়েছে।

শেষ পর্যন্ত হার স্বীকার করতেই হল ‘কাপ্তান’কে। সেই সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত হল তেহেরিক-ই-ইনসাফ সরকার। জানা গিয়েছে, সোমবার ফের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অধিবেশন বসার কথা রয়েছে। ওই সভা থেকেই পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রীর নাম নির্ধারণ করার সম্ভবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ১৯৪৭-এর পর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও পাক প্রধানমন্ত্রীই ৫ বছরের মেয়াদ শাসন ক্ষমতা চালাতে পারেনি। কখনও রাজনৈতিক নানা কারণ আবার কখনও সরাসরি সেনার হস্তক্ষেপের জেরে পর হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীরা। ইমরান খানও সেই ধারার ব্যতিক্রম হলেন না। মেয়াদ শেষ করার আগে তাঁকেও পূর্বসূরিদের মত পদ খোয়াতে হল। 

পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, শনিবার সকাল ১০ টায় ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা টালবাহানায় দেরি হয়। প্রথম থেকেই সংসদে ছিলেন না ইমরান খান। এদিকে, পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আস্থা ভোট না হলে ইমরান খান, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়। কেউ যাতে দেশ ছাড়তে না পারে, তার জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রচুর পুলিশের ভ্যান ছিল। 

এদিকে, শেষপর্যন্ত কাপ্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারবেন না জানিয়ে দিয়ে, অধ্যক্ষ আসাদ কাইসার এবং ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি পদত্যাগ করেন। এরপরই পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ার প্যানেলের সদস্য আয়াজ সাদিক স্পিকারের দায়িত্ব নেন এবং মধ্যরাতের আগেই তিনি আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করেন।

এরপর শুরু হয় প্রক্রিয়া। প্রথা মেনে মধ্যরাতের মিনিট দুই আগে, অধিবেশন মুলতুবি করা হয়। আবার রাত ১২ টার পর অর্থাৎ রবিবার ফের শুরু হ্যব অধিবেশন। সেখানেই আস্থা ভোটের শুরু হয়। ৩৭২ আসন বিশিষ্ট পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে (ম্যাজিক ফিগার সংখ্যা ১৭২) বিরোধী জোট পায় ১৭৪টি ভোট। ইমরান খানের তেহেরিক-ই-ইনসাফ সরকারের পক্ষে একটিও ভোট পড়েনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয়।

অন্যদিকে, মধ্যরাতেই ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ইমরান অনুগামী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের কর্মীরা রাস্তায় নেমে পুরো ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়। এর মধ্যেই পাক সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, দেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের কোনও নেতাই দেশ ছাড়তে পারবেন না।

উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত পাক রাজনীতিতে গতিপ্রকৃতি বলছে, পরবর্তী পাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা শাহবাজ শরিফ।