বুধবার, ০১ মে, ২০২৪

শ্রীলঙ্কার মতোই কি পাকিস্তানের পিরিস্থিতি? খরচ বাঁচাতে বাড়ি থেকে শিল্পাঞ্চলে ব্যাপক বিদ্যুৎ ছাঁটাই

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২২, ০১:৪৪ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২২, ০৭:৪৪ পিএম

শ্রীলঙ্কার মতোই কি পাকিস্তানের পিরিস্থিতি? খরচ বাঁচাতে বাড়ি থেকে শিল্পাঞ্চলে ব্যাপক বিদ্যুৎ ছাঁটাই
শ্রীলঙ্কার মতোই কি পাকিস্তানের পিরিস্থিতি? খরচ বাঁচাতে বাড়ি থেকে শিল্পাঞ্চলে ব্যাপক বিদ্যুৎ ছাঁটাই / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ পাকিস্তানের রাজনৈতিক ডামাডোল এবং অস্থির পরিবেশের কথা এখন আর কারোর অজানা নয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে গোদের উপর বিষফোড়ার মতো পাকিস্তানে ব্যাপক আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিকের সমস্ত ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, পাকিস্তানের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতোই হতে চলেছে। 

এদিকে, কোষাগারের অবস্থা এতোটাই সঙ্গীন যে, বিদেশ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস বা কয়লা আমদানি করতে পারছে না পাকিস্তান। এর জেরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে পড়শি দেশে। ফলে একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন আবাসন, বসতবাড়ি চরম বিপদের সম্মুখীন। শিল্পাঞ্চল থেকে বাড়ি সর্বত্র ব্যাপক হারে বিদ্যুৎ ছাঁটাই করেছে পাক সরকার। কারণ সরকার খরচ সামলাতে পারছে না। এমনটাই অভিযোগ। 

এমনিতেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি-গ্যাস এবং কয়লার দাম গত মাসে রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পাকিস্তান নাজার থেকে গ্যাস এবং জ্বালানি কিনতে পারছে না। উল্লেখ্য, শক্তি উৎপাদনে এই দেশ গত এক বছরে ১৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে। যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এদিকে, দেশে আর্থিক সংকট চরমে। 

এদিকে, এর মধ্যেই সম্প্রতি পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। সে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছে নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ শরিফ। তাঁর মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল সম্প্রতি একটি টুইট করে জানিয়েছেন যে, চলতি মাসের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হয়েছে। আবার একই পরিমাণ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে যান্ত্রিক সমস্যার কারণে। উল্লেখ্য, করাচির আরিফ হাবিব লিমিটেডের প্রধান তাহির আব্বাস জানিয়েছেন যে, গোটা দেশের মোট যে পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, তার এক-পঞ্চমাংশ এই বিদ্যুকেন্দ্র গুলি জোগান দিত। এদিকে, বহু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় সমস্যা আরও জটিল আকার নিয়েছে।  

এই মুহূর্তে পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল, বর্তমানে দেশে উদ্ভূত আর্থিক সংকটের মোকাবিলা করা এবং দেশে সুস্থির পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা। তবে, এই মুহূর্তে আর্থিক সংকটের পাশাপাশি অন্যতম বড় সমস্যা হল বিদ্যুৎ সঙ্কট। পাকিস্তানের নিজস্ব কোনও জ্বালানির উৎস নেই। তাই জন্যই জ্বালানির ক্ষেত্রে বিশ্ব বাজারের উপর নির্ভর করতে হয় পাকিস্তানকে। আমদানি করতেই দেশের কোষাগারের অনেক টাকা ব্যয় হয়। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে। অন্যদিকে, বিগত কয়েক মাসে পাকিস্তানকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারীরা বাতিল করেছে। 

প্রসঙ্গত পাকিস্তানের বিপুল সংখ্যায় জ্বালানির প্রয়োজন। সঠিক পরিমাণে জ্বালানি না পেলে, গোটা দেশের পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা যে রয়েছে, সে বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনও সন্দেহ নেই। শুধু বিদ্যুতের ক্ষেত্রেই নয়, সমস্ত ক্ষেত্রেই জ্বালানির চাহিদা না মেটাতে পারলে, অর্থনৈতিক কার্যকলাপও বন্ধ হতে বসবে।  তাই অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া হিসাবে পাকিস্তানের এই জ্বালানি সংকট শ্রীলঙ্কার মতো অস্তিত্বের সংকটের দিকে ঠেলে না দেয়, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।