শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সাপে কামড়ালে এবার খাওয়ার ওষুধেই চিকিৎসা সম্ভব! ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শুরু ট্রায়াল

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২২, ০৯:৪৫ পিএম | আপডেট: মে ১৫, ২০২২, ০৩:৫০ এএম

সাপে কামড়ালে এবার খাওয়ার ওষুধেই চিকিৎসা সম্ভব! ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শুরু ট্রায়াল
সাপে কামড়ালে এবার খাওয়ার ওষুধেই চিকিৎসা সম্ভব! ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শুরু ট্রায়াল / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিষধর সাপে কামড়ালে সঠিক সময়ে বিষ নিষ্কাশন না করলে সেই ব্যক্তির মৃত্যু অবধারিত। বিশেষ করে গ্রামেগঞ্জে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। এতদিন কোনও ব্যক্তিকে সাপে কামড়ালে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশনই ছিল একমাত্র ভরসার জায়গা। তবে এবার সাপে কামড়ানো ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য বাজারে আসতে চলেছে খাওয়ার ট্যাবলেট।

ইতিমধ্যেই দেশের চারটি মেডিকেল কলেজে শুরু হয়েছে গবেষণা। সাপের কামড়ের চিকিৎসায় খাওয়ার ট্যাবলেট ভ্যারিসপ্ল্যাডিব মিথাইলের মানবদেহে প্রয়োগের দ্বিতীয় দফার গবেষণা প্রক্রিয়া চলছে। এর আগে আমেরিকায় এই ট্রায়ালের প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয়েছে। এরপর ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন-এর পক্ষ থেকে এই গবেষণার দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়ালের সূচনায় সীলমোহর দেওয়া হয়।

সম্প্রতি ক্যানিংয়ের এক যুবককে বিষধর সাপ কামড়ায়। তাঁকে নিয়ে আসা হয় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে। সেখানেই প্রথম মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যারিসপ্ল্যাডিব মিথাইলের প্রয়োগ করা হয়। ২৫০ মিলিগ্রামের দুটি ট্যাবলেটের সঙ্গে দেওয়া হয় অ্যান্টি-স্নেক ভেনম ইঞ্জেকশন। এভাবেই কলকাতার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের হাত ধরে সাপের কামড়ের চিকিৎসার এক নয়া অধ্যায় শুরু হয়।

বর্তমানে ভারতে যে চারটি মেডিকেল কলেজের এই চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা চলছে সেগুলি হল ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ (কলকাতা), পোস্ট গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ (চন্ডীগড়), জহরলাল ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড রিসার্চ (পন্ডিচেরী) ও এসপি মেডিক্যাল কলেজ (রাজস্থান)।

সাপের কামড়ের চিকিৎসায় এই নতুন ট্যাবলেট অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। কারণ এই চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দেশের সর্বত্র তৈরি হয় না। পশ্চিমবঙ্গে এই ইঞ্জেকশন আসে দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে। সেখানেও রয়েছে সমস্যা। কারণ দক্ষিণের সাপের বিষে উপস্থিত প্রোটিনের পরিমাণ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে সাপের বিষে উপস্থিত প্রোটিনের পরিমাণের সমান হয় না। ফলে অনেক সময়ে রোগীদের শরীরে এই প্রকার ইনজেকশন প্রয়োগ বিফলে যায়।

জানা গিয়েছে, প্রতিবছর প্রায় ৩০০-র বেশি রোগী সাপের কামড়ের হাসপাতালে ভর্তি হন। অন্যদিকে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১২ লাখ মানুষের। এর মধ্যে বেশিরভাগের মৃত্যুই ঠিক‌ সময় চিকিৎসা শুরু না হওয়ার কারণে হয়েছে। এই সমস্যার অন্যতম সমাধান হতে চলেছে ভ্যারিসপ্ল্যাডিব মিথাইল।