শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

মেধা তালিকায় না থেকেও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের চাকরি! মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর সুপারিশ বিচারপতির

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২২, ০৯:০২ পিএম | আপডেট: মে ১৮, ২০২২, ০৩:১৭ এএম

মেধা তালিকায় না থেকেও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের চাকরি! মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর সুপারিশ বিচারপতির
মেধা তালিকায় না থেকেও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের চাকরি! মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর সুপারিশ বিচারপতির

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এখানেই শেষ নয়, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর এবার এসএসসি দুর্নীতি মামলায় নাম জড়াল রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর। 

অভিযোগ, মেধা তালিকায় পরেশ অধিকারীর মেয়ের নাম না থাকলেও, চাকরি পেয়ে গিয়েছেন তিনি। তাই পরেশ অধিকারীর মেয়ের নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। এর সঙ্গে মঙ্গলবার রাজ্য দফতরের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার অর্থাৎ আজই রাতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে, এদিন এই প্রসঙ্গে বিচারপতি এও জানিয়েছেন যে, কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশ ভরসা আছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণে এও জানিয়েছেন যে, ‘তাঁদের হাত না বাঁধলে তাঁরা সঠিক তদন্তে দক্ষ।’

তফসিলি জাতিভুক্তদের জন্য মেধা তালিকার ওয়েটিং লিস্টে প্রথমে নাম ছিল ববিতা নামে এক পরীক্ষার্থীর। কিন্তু পড়ে এসএসসি’র ওয়েবসাইটে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনের অপেক্ষামান তালিকায় দেখা যায় যে, ববিতার নাম দ্বিতীয় স্থানে চলে যায়। প্রথম স্থানে উঠে আসে মন্ত্রী কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। 

উল্লেখ্য, কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশনে অঙ্কিতার নাম না থাকলেও, যখন তাঁর বাবা পরেশচন্দ্র অধিকারী ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দেন, তারপরই তালিকায় এক নম্বরে চলে যায় অঙ্কিতার নাম। এমনটাই অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এই নিয়ে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, ‘বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারীকে আজ রাত ৮ টার মধ্যে সিবিআই দফতরে উইপস্থিত থাকতে হবে। আমাদের অভিযোগ, মন্ত্রীর মেয়ের নাম তালিকায় কোথাও ছিল না। মামলাকারীর নম্বর বেশি হওয়ার পরেও, আচমকাই মন্ত্রীর মেয়ের নাম এক নম্বরে চলে এল।  এদিকে মামলাকারী এখনও নিয়োগ পাননি। কাউন্সিলিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। আদালতে শুনানি চলাকালীন জানা গেল, মামলাকারীর নম্বর মন্ত্রীর মেয়ের নম্বরের থেকে অনেক বেশি। এমনকি মন্ত্রীর মেয়ে ইন্টারভিউয়ে পর্যন্ত বসেননি। অথচ তাঁর নাম তালিকায় নিয়ে এসে নিয়োগ করা হল। ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলে এতদিন শিক্ষকতা করছেন তিনি। কিন্তু যিনি যোগ্য, তিনি আজ অবধি চাকরি পেলেন না।’ 

এদিন শুনানি চলাকালীন বিচারপতি জানতে চান, মন্ত্রীর মেয়ের নম্বর কত এবং মামলাকারীর নম্বর কত? তাতে দেখা যায়, মন্ত্রীর মেয়ের প্রাপ্ত নম্বর ৬১ অন্যদিকে মামলাকারীর প্রাপ্ত নম্বর ৭৭। এছাড়াও অঙ্কিতা পার্সোনালিটি টেস্ট দেননি বলেও জানা গিয়েছে। 

এদিকে, শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আদালতের রাত ৮ টার মধ্যে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ থাকলেও, মন্ত্রী পরেশ অধিকারী এখনও এসে পৌঁছাতে পারেননি। সিবিআই সূত্রে খবর, মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। এর পরে মন্ত্রীকে মেল করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সিবিআই-এর আধিকারিকরা আরও কিছুক্ষণ মন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করবেন দফতরে।