শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

‘আমাদের সম্মানই সব, ওটা কেউ লুঠে নিলে সব চলে যায়’! মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২২, ০৫:৪০ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২২, ১১:৪০ পিএম

‘আমাদের সম্মানই সব, ওটা কেউ লুঠে নিলে সব চলে যায়’! মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী
‘আমাদের সম্মানই সব, ওটা কেউ লুঠে নিলে সব চলে যায়’! মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আবারও একবার মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন ‘সম্মানহানি করবেন না। আসল খবর দেখান। আমার বিরুদ্ধে সত্যি খবর হলে দেখান, কিছু মনে করব না।’ তারপর ফের আজ একবার মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো।

রবিবার অর্থাৎ আজ বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জিউরিডিক্যাল সায়েন্সেস-এর সমাবর্তনে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানেই তিনি মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে সরব হন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সম্মানই আমাদের সব। ওটাই যদি কেউ লুঠে নেয়, তাহলে সব চলে যায়। এটা একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না।’ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কেন বললেন এই কথা? কোন সম্মানের কথাই বা তিনি বলছেন?

আসলে, এই মুহূর্তে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় ফেঁসে রয়েছেন রাজ্যের একাধিক নেতা-মন্ত্রীরা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলব করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গরু পাচার মামলা থেকে শুরু করে কয়লা কেলেঙ্কারি-সহ একাধিক মামলায় ইডি-সিবিআইয়ের তরফে ডাক পেয়েছেন রাজ্যের শাসকদলের প্রভাবশালীরা। আর এর জন্যই বারবার বিপাকে পড়তে হয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এটা নিয়েই একাধিকবার নাগরিক মহলের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমেও চর্চা লেগেই রয়েছে। নানা জনে নানা মত প্রকাশ করছেন। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আদালত রায় দেওয়ার আগেই মিডিয়া ট্রায়াল শুরু হয়ে যাচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগের সুরে আরও বলেন যে, ‘মিডিয়া বিচারব্যবস্থাকে গাইড করছে।’

এরপরই তিনি রীতিমতো ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘এটা হতে পারে না। মিডিয়া বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমাদের সম্মানই আমাদের সব। ওটাই যদি কেউ লুঠে নেয়, তাহলে সব চলে যায়। এটা একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না।’

এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মিডিয়া ট্রায়ালের পাশাপাশি ফের একবার যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামা রক্ষার দাবিতেও সরব হন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন যে, দেশ ক্রমশ রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকেই এগিয়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র বিচারব্যবস্থাই দেশবাসী এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন দেশের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ললিতজি আগামী মাসেই অবসর নেবেন। এই দু’মাসে আমরা দেখেছি বিচারব্যবস্থা কাকে বলে! আমি বলছি না বিচারব্যবস্থা থেকে মানুষের বিশ্বাস উঠে গিয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপ হচ্ছে।’ এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে বিচারব্যবস্থাই একমাত্র মানুষকে বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে পারে। বিচারব্যবস্থা মানুষের কান্না শুনুক।’ এছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ‘একদল মানুষ গণতান্ত্রিক কাঠামোকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে। আড়ালে অনেক কিছুই হচ্ছে। দেশ ক্রমশ রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’