শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

উপকূলে ‘অশনি’র সংকেত! ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকবে প্রশাসন, পিছিয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২২, ০৫:২৭ পিএম | আপডেট: মে ৮, ২০২২, ১১:২৭ পিএম

উপকূলে ‘অশনি’র সংকেত! ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকবে প্রশাসন, পিছিয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর
উপকূলে ‘অশনি’র সংকেত! ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকবে প্রশাসন, পিছিয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলার উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র আশঙ্কা। তাই বিপর্যয় মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। বিশেষ করে উপকূলের জেলাগুলিতে ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই পিছিয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর।

সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১০ এবং ১১ তারিখে মুখ্যমন্ত্রীর পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে যাওয়ার কথা থাকলেও, তা পিছিয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে ১০ এবং ১১ তারিখের পরিবর্তে ১৭ এবং ১৮ তারিখ পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই দুই জেলার কর্মসূচি শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফিরবেন ১৯ তারিখ। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর। সরকারিভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে। 

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন কার্যালয়ে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তাঁর জেলা সফরের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ফের জেলা সফরে গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক শুরু করবেন। আগামী ১০ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল সফরের। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ১১ মে পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে দলীয় বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ১২ টার সময়। বৈঠক শেষে ১১ তারিখই সেখান থেকে চলে যেতেন ঝাড়গ্রামে। সেখানে বিকেল ৪ টে নাগাদ ছিল প্রশাসনিক বৈঠক এবং ১২ মে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে দলীয় বৈঠকের কথা ছিল। 

কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ ধেয়ে আসছে। হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার অর্থাৎ আজ থেকেই বদলে যাবে আবহাওয়া। মঙ্গলবার থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমের জেলাগুলিতে হবে বৃষ্টি। রবিবার দক্ষিণ আন্দামানে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে বলেই জানা গিয়েছে হাওয়া সূত্রে।

গোপালপুর বা তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় অশনি’র আছড়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ তারিখ পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হবে ঘূর্ণাবর্ত। এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ রয়েছে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওডিশার দিকে। 

এদিকে, এই ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। ৯ তারিখ, সোমবার থেকে কমতে পারে বৃষ্টিপাত। কিন্তু, ১০ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০ মে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

এ রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় অশনি আছড়ে নাও পড়তে পারে। যদিও এই মুহূর্তে এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে সরাসরি বাংলার উপকূলে অশনি আছড়ে নাও পড়তে পারে। কিন্তু তাও এর প্রভাব ভালোই পড়তে চলেছে বাংলার উপরে। জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরের পর থেকে উপকূলীয় জেলা-পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় বৃষ্টি শুরু হবে। মঙ্গলবার ভোর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবার উপকূলের দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা এবং ওড়িশা লাগোয়া জেলায় ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে। তবে, এই হাওয়ার গতিবেগ নির্ভর করবে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষমতার উপর।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকবে প্রশাসন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর জেয়া সফর পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ তারিখের বদলে চলতি মাসের ১৭ তারিখ পশ্চিম মেদিনীপুরে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ঝাড়গ্রামের কর্মসূচি সেরে ফিরবেন কলকাতায়।