শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ফ্ল্যাটের পাঁচতলা থেকে পড়ে মৃত্যু তরুণীর! নেপথ্যে কী কারণ? ঘনাচ্ছে রহস্য

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২২, ০৭:১৭ পিএম | আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২২, ০১:১৭ এএম

ফ্ল্যাটের পাঁচতলা থেকে পড়ে মৃত্যু তরুণীর! নেপথ্যে কী কারণ? ঘনাচ্ছে রহস্য
ফ্ল্যাটের পাঁচতলা থেকে পড়ে মৃত্যু তরুণীর! নেপথ্যে কী কারণ? ঘনাচ্ছে রহস্য

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফ্ল্যাটের পাঁচতলা থেকে পড়ে মৃত্যু গৃহবধুর। ফ্ল্যাটের নীচ থেকে উদ্ধার হয় তরুণীর রক্তাক্ত দেহ। খুন না আত্মহত্যা? ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। যদিও ইতিমধ্যেই গৃহবধুর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে।

শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইআটি আমবাগান এলাকায়। প্রতিবেশীদের দাবি, ফ্ল্যাটের পাঁচ তলা থেকে পড়েই তরুনীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও মৃতার আত্মীয়রা দাবি করছেন, তাঁকে বহুতলের ছাদ থেকে ফেলে দিয়েই খুন করা হয়েছে। 

সূত্রের খবর, মৃতার নাম তিতাস নন্দী। ২৮ বছর বয়সী তিতাস একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতা ছিলেন। তাঁর স্বামী কৌস্তুভ সরকার পেশায় ডাক্তার। মাস দেড়েক আগে আমবাগানের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিতাস এবং কৌস্তুভ। তাঁদের সামাজিক বিবাহ সম্পন্ন না হলেও রেজিস্ট্রি ম্যারেজ হয়ে গিয়েছে। এমনকি তিতাস অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলেও খবর।

তবে এলাকাবাসীর দাবি, তিতাসের সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন কৌস্তুভ। আর সেই নিয়েই তাঁদের মধ্যে প্রায়শই ঝামেলা লেগে থাকত। এমনকি যে ফ্ল্যাটে তিতাস এবং কৌস্তুভ থাকতেন সেই ফ্ল্যাটেই থাকতেন তিতাসের এক মাসি রঞ্জিতা চৌধুরী। তিনি এই ব্যাপারে জানান, তিতাস কোনওকালেই পছন্দ করতেন না যে কেউ তাঁর ব্যাপারে কথা বলুক। আর এই নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চরমে উঠত।

তাঁর কথায়, শুক্রবার দুপুর থেকেই দুজনের মধ্যে চেঁচামেচি এবং মারপিট চলছিল। এরপর এদিন রাত ৮ টা নাগাদ ছেলেকে পড়িয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরার পরেও তিনি দেখেন তিতাস ও কৌস্তুভের মধ্যে ঝামেলা অব্যাহত। এরপরই কেউ একজন ছাদে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফ্ল্যাটের নীচ থেকে তিতাসকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। রঞ্জিতা চৌধুরীর দাবি, কৌস্তুভই তিতাসকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে।

অন্যদিকে তিতাসের পরিবারে তরফ থেকেও একই দাবি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তরুণীর বাড়ির সদস্যদের তরফ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাঁদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে নাগেরবাজার থানার পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (বি) ধারা (বধূহত্যা), ৪৯৮ (এ) অর্থাৎ বধূ নির্যাতন এবং ৩০২ (খুন) এই তিন ধারায় নাগেরবাজার থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদিকে তিতাসের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে আরজিকর হাসপাতালে। কৌস্তুভকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তিনি অবশ্য পুরো ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেই দাবি করেছেন। তবে তিতাসকে যে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে তা প্রমাণ করার জন্য প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ চালাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। কোনও বাহ্যিক শক্তির প্রয়োগ করা হয়েছিল কিনা তা জানতে সাহায্য করছে ফরেন্সিক ডিপার্টমেন্টও।