শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

‘আমি হতাশ, কিছুই করছে না সিবিআই!’ এসএসসি তদন্তে মন্তব্য ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম | আপডেট: জুন ১৪, ২০২২, ০৯:৪১ পিএম

‘আমি হতাশ, কিছুই করছে না সিবিআই!’ এসএসসি তদন্তে মন্তব্য ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
‘আমি হতাশ, কিছুই করছে না সিবিআই!’ এসএসসি তদন্তে মন্তব্য ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে সিবিআই-এর উপর ভরসা করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সিবিআই-এর তদন্তে তিনি ‘আশাহত’।  

এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে রাজ্যের তদন্তকারীদের উপর ভরসা না করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার গোয়েন্দাদের উপর তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু মঙ্গলবার সিবিআইয়ের তদন্ত করার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন খোদ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই। বিচারপতিকে এও বলতে শোনা গিয়েছে যে, অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষে তিনি কোনও আলো দেখতে পাচ্ছেন না। এখানেই শেষ নয়, তিনি সিবিআইয়ের থেকে সিট ভাল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। 

মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘২০২১-এর দুর্নীতির তদন্তেই এখনও কিছু করেনি সিবিআই। কাকে তদন্ত করতে বলব। আমি ক্লান্ত, হতাশ।’ এদিন প্রধান বিচারপতি সিবিআই- এর তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি হতাশ, আমি ক্লান্ত। দুর্নীতির তদন্তে কিছুই করেনি সিবিআই। আমার সন্দেহ আছে সিবিআই কী করবে। কর্মহীনদের কী হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে সিবিআইয়ের চেয়ে সিট ভালো। নভেম্বরে সিবিআইকে প্রথম তদন্তের নির্দেশ। তার পর কী হয়ছে? কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না। ২০২১-এর দুর্নীতির তদন্তেই এখনও কিছু করে উঠতে পারেনি সিবিআই। কাকে তদন্ত করতে বলব। আমি ক্লান্ত।’

এদিকে, সোমবার প্রাথমিক শিক্ষায় নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তভারও সিবিআইকেই দিয়েছেন বিচারপতি। সেই মর্মে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়োগের দায়িত্বে থাকা দুই কর্তাকে নিজাম প্যালেসে ডেকে প্রায় ঘণ্টা চারেক জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কিন্তু মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে দিন সাতেক হইহট্টগোল হল। কিন্তু তার ফল কী হল?’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘যত দূর জানি গত এক বছরে ডজন খানেক সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেষে কি তারা নোবেল প্রাইজ নেবে না কি!’

আজকে বিচারপতির এই মন্তব্যের পর একটা বিষয় স্পষ্ট যে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপরেই আস্থা হারাচ্ছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, এ রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-তে শিক্ষক- শিক্ষিকা নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। এই দুর্নীতিতে মামলা হতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই দুর্নীতির তদন্তের ভার দেন সিবিআই-এর হাতে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে এসএসসি-র তাবড় তাবড় কর্তাদের সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন খোদ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

এই নিয়োগে দুর্নীতি প্রমাণিত হতেই, একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রায়ে তিনি বেনয়িমে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের শুধু চাকরিই বাতিলের নির্দেশ দেননি, সেই সঙ্গে বেতনের টাকাও ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বাদ যাননি খোদ রাজ্যের রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা। কিন্তু এখন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই সিবিআই তদন্তে আস্থা হারাচ্ছেন।