শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

কম নম্বর পেয়েও মেধাতালিকার শীর্ষে নাম! হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত পরেশ-কন্যা অঙ্কিতা

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: মে ২০, ২০২২, ০২:৫৫ পিএম | আপডেট: মে ২০, ২০২২, ০৮:৫৫ পিএম

কম নম্বর পেয়েও মেধাতালিকার শীর্ষে নাম! হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত পরেশ-কন্যা অঙ্কিতা
কম নম্বর পেয়েও মেধাতালিকার শীর্ষে নাম! হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত পরেশ-কন্যা অঙ্কিতা

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের সাফ কথা,  ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিমাণ বেতন তিনি পেয়েছেন তার পুরোটাই কিস্তিতে ফেরত দিতে হবে মন্ত্রী-কন্যাকে। সেই টাকা জমা দিতে হবে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে। অঙ্কিতার স্কুলে প্রবেশাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি জানানো হয়েছে, আজ থেকে কোথাও শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না অঙ্কিতা অধিকারী।

ঠিক কোন অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আদালতের এই সিদ্ধান্ত? শিক্ষিকা হিসেবে তাঁর চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রশ্ন ওঠে। কম নম্বর পেয়েও তাঁর থেকে যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে, কোনওরকম পার্সোনালিটি টেস্ট ছাড়াই স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োজিত হন পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। বলাবাহুল্য, বাবার প্রভাব খাটিয়ে, যোগ্যতা না প্রমাণ করেই অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োজিত হন তিনি। এই অভিযোগ তুলেই মামলা দায়ের করেন শিলিগুড়ির এক চাকরিপ্রার্থী ববিতা সরকার।

তাঁর অভিযোগ, ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বসেন তিনি। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত হয় মেধাতালিকা। সেই তালিকায় প্রথম কুড়ি জনের মধ্যে নামও ছিল তাঁর। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই প্রথম তালিকা বাতিল করে নতুন করে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায় একেবারে প্রথম স্থানে রয়েছে উঠে এসেছে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। অন্যদিকে ববিতার নাম রয়েছে ওয়েটিং লিস্টে।

প্রথম তালিকায় যেখানে কোথাও অঙ্কিতার নাম ছিল না সেখানে দ্বিতীয় তালিকায় কিভাবে শীর্ষস্থানে উঠে এলো তাঁর নাম? এমনটাই প্রশ্ন জাগে ববিতার মনেও। এছাড়াও ববিতার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭৭। সেখানে তাঁর থেকে ১৬ নম্বর কম পেয়ে ৬১ নম্বর নিয়ে মেধা তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নেন অঙ্কিতা। এমনকি কিছুদিনের মধ্যে কোচবিহারের একটি স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন মন্ত্রীকন্যা। অথচ বেশি নম্বর পেয়েও চাকরি থেকে বঞ্চিত হন ববিতা। এরপরই তিনি আইনের দ্বারস্থ হন।

অবশেষে শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিলেন। এদিন বিচারপতি জানান, মোট ৪১ মাস বেতন পেয়েছেন অঙ্কিতা। সেই বেতনের পুরো টাকাটাই দুটি কিস্তিতে ফেরত দিতে হবে। আগামী ৭ জুনের মধ্যে মেটাতে হবে প্রথম কিস্তির টাকা এবং দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দিতে হবে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে। এরপর থেকে তিনি আর কোথাও শিক্ষিকা হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না।