শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

অনুব্রত মণ্ডলকে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ হাইকোর্টের! তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম | আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২, ০৪:০৪ পিএম

অনুব্রত মণ্ডলকে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ হাইকোর্টের! তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ
অনুব্রত মণ্ডলকে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ হাইকোর্টের! তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বীরভূম তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, তদন্ত চালিয়ে যেতে হবে সিবিআইকে। তবে এখনই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। পাশাপাশি আদালতের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতারও করা যাবে না এখনই। যদিও আদালতের নির্দেশে এও বলা হয়েছে যে, তদন্তে সবরকমভাবে সহযোগিতা করতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। দুর্গাপুরে গিয়ে সাক্ষী হিসেবে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ৫ সপ্তাহ পরে। 

 

উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসায় ইলামবাজারের গোপালনগর গ্রামে গত ২ মে খুন হয়েছিলেন বিজেপি নেতা গৌরব সরকার। ভোটের ফল প্রকাশের দিন বিকেলে গোপালনগর গ্রামে শাসকদলের একটি বিজয় মিছিল বের হয়। গৌরব এবং তাঁর ভাই সৌরভ বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। অভিযোগ, মিছিল থেকে কয়েকজন এসে দুই ভাইকে রড দিয়ে মারতে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গৌরবের। সৌরভকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেই ঘটনায় মোট ২৪ জনের নামে ইলামবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ইলামবাজার থানার পুলিশ প্রথমে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা জামিনে ছাড়া পায়। পরবর্তী সময়ে হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। তারা ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরপর সাতজন আত্মসমর্পণ করে। ৮ জন অভিযুক্ত ফেরার। 

 

গত বছর নভেম্বর মাসে ফেরারদের বিরুদ্ধে গ্রামে নোটিস দিয়েছিল সিবিআই। আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপরে ৮ জন আত্মসমর্পণ করে। ধৃতদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১২ জন জামিন পেয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় অনুব্রত মণ্ডলের নাম জানতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। তাই তাঁকে সিবিআই ক্যাম্পে গত শুক্রবার তলব করা হয়। যদিও অসুস্থ জানিয়ে হাজিরা এড়ান অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ ফের তাঁকে বীরভূমের ইলামবাজারের ক্যাম্পে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি।

 

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। সেখানেই অনুব্রত্র পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে ৮ সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়। জানানো হয় যে, হাইপারটেনশন ছাড়াও বীরভূম তৃণমূল জেলা সভাপতির একাধিক শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে। রয়েছে সিওপিডির সমস্যা। করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরে যাওয়া তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন কলকাতায় সিবিআই দপ্তর থাকা সত্ত্বেও লখনউ থেকে চিঠি পাঠানো হল অনুব্রতকে। তৃণমূল নেতাকে দুর্গাপুরে না ডেকে কেন সিবিআই আধিকারিকরা বোলপুর গেলেন না, সেই প্রশ্নও তোলেন আইনজীবী। এরপরই সবদিক বিবেচনা করে বিচারপতি জানিয়েছেন, আপাতত হাই কোর্টের নির্দেশ ছাড়া অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না। তবে তদন্তকারীদের সবসময় সহযোগিতা করতে হবে অনুব্রতকে। অর্থাৎ তৃণমূল নেতাকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট।