শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

‘সত্য উদঘাটনের প্রয়োজন আছে’, বগটুই কাণ্ডে এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২২, ১২:২০ পিএম | আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২২, ০৬:৩১ পিএম

‘সত্য উদঘাটনের প্রয়োজন আছে’, বগটুই কাণ্ডে এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
‘সত্য উদঘাটনের প্রয়োজন আছে’, বগটুই কাণ্ডে এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের ঘটনায় এবার বড় সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের। এদিন বগটুই কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট- এর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বগটুই কাণ্ডে দায়ের হওয়া স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় এই রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বেই চলবে তদন্ত। এরপর তদন্তের স্বার্থে সিট আর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না। সিবিআই-এর হাতেই ধৃতদের তুলে দিতে হবে। জানা গিয়েছে, এপ্রিলের ৭ তারিখের মধ্যেই তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। 

গত সোমবার রাতে বোমার হামলায় বগটুই গ্রামে রামপুর হাটের এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ওই এলাকার ১০ টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনায় মহিলা ও শিশু-সহ ৮ জনের মৃত্যু হয় বলেই খবর। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সিট গঠন করে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছিল। যদিও অনেকেরই দাবি সিটের উপর আস্থা রাখা সম্ভব। কারণ, পুলিশের বিরুদ্ধ অভিযোগ, যেখানে রাজ্য পুলিশ ইচ্ছে করলে, ঘটনার দিন অতগুলো মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারত, সেটা না করে, খবর পাওয়ার পরও চুপ থেকেছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা সিটের উপর ভরসা করতে পারছে না। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকেও সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছিল। এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে মামালা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাতেই এদিন এই রায় দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

এদিন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার ওই মামলায় একাধিক প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার সময় ওই এলাকায় কতোগুলি মোবাইল ফোন সক্রিয় ছিল? কারা সবার আগে নমুনা সংগ্রহ করেছিল? পাশাপাশি এফআইআর-এর বয়ান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এদিন রায় দেওয়ার সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ঘটনার সবটা শুনেছি। এই ঘটনার বিচারের জন্য এবং সত্য উদঘটনের জন্য সিবিআই তদন্ত করবে। সত্য উদ্ঘাটনের প্রয়োজন আছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থেই তদন্তভার সিবিআই হাতে তুলে দেওয়া হল।’ বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষের বিশ্বাস বাড়াতে এবং ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে এই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এমনটাই আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। 

জানা গিয়েছে, রায়ের অর্ডার কপি হাতে আসার পরই সিবিআই আধিকারিকরা বগটুই গ্রামে যাবেন। রাজ্য সরকারের গঠিত সিট আপাতত আর তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। কলকাতা হাইকোর্ট এদিন স্পষ্ট জানিয়েছে যে, এই মামলায় আরও যারা দোষী, কিন্তু ধরা পড়েনি, অবিলম্বে তাদের ধরতে হবে। অন্যদিকে, এদিন কলকাতা হাইকোর্ট সিটের তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আদালত বলছে, ‘২২ তারিখ সিট গঠিত হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তদন্তে কোনও কার্যকরী অগ্রগতি হয়নি। যতটা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা উচিত ছিল, তা হয়নি। অভিযোগ আছে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের। তাই এই ঘটনার তদন্তভার নিরপেক্ষ সংস্থার হাতে দেওয়া হল।’

বগটুই কাণ্ডে এদিন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর, বাম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘সিবিআই তদন্তের নির্দেশ সংগত। স্বাধীনভাবে রাজ্যের পুলিশ আর কাজ করতে পারছে না।’

আবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত। আগামীদিনে সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে যুক্ত নেতারা, যাঁরা সেদিন থানার আইসি ও এসডিপিও-কে ফোন করে বলেছিলেন, ২টো বাড়ি জ্বলতে দিন, এখন যাওয়ার প্রয়োজন নেই, তাঁরা গরাদের পিছনে যাবেন।’