সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে বাধা, ‘মনে রাখবেন বাংলায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে’! হুঁশিয়ারি মমতার

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২২, ০৩:৪৪ পিএম | আপডেট: মার্চ ৯, ২০২২, ০৪:১৪ পিএম

বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে বাধা, ‘মনে রাখবেন বাংলায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে’! হুঁশিয়ারি মমতার
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে বাধা, ‘মনে রাখবেন বাংলায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে’! হুঁশিয়ারি মমতার

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের একবার নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিধানসভা। সোমবার রাজ্যপালের ভাষণের সময় তুমুল বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের শান্ত হতে বললেও, তাতে কর্ণপাত করেননি বিজেপি বিধায়করা। সেই গণ্ডগোলের জেরে তুমুল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সেই কারণেই ভাষণের প্রথম ও শেষ লাইন পড়েই বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করেন। সেই ঘটনার জন্য আজ অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হয় বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী ও সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই এদিন ফের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় বিধানসভায়।

দুই বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন তুলে নেওয়ার দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা কক্ষ। অভিযোগ ছিল, সোমবার এই দুই বিজেপি বিধায়ক সামনে থেকে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এদিন অধিবেশনের প্রথম পর্যায়েই বিধানসভায় শাস্তির প্রস্তাব আনেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগে তিনি জানান যে, সোমবার বাজেট অধিবেশন কক্ষে কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়েছিলেন সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও মিহির গোস্বামী। এরপরই ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে স্পিকার দুজনকে সাসপেন্ড করে। এতেই ঘটে বিপত্তি।

অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। উক্ত দুই বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে স্পিকারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপর ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। এর জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ক্রমাগত জয় শ্রীরাম স্লোগান তুলতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের রাজ্যপালের জবাবি ভাষণে বাধা দেন বিজেপি বিধায়করা। এরপরে মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ শুরু করতে গেলে, তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। এরপরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। 

এদিন বিধানসভায় রাজ্যপালের বক্তব্যের জবাবি ভাষণে সেই গোলমালের কথা টেনে এনে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় তাঁর ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বিজেপি। ওরা মানুষের কথা শোনে না। ওদের একটাও আসন দেওয়া উচিত নয়। খালি দাঙ্গা করে। সমস্ত অপপ্রচারের জবাব দিয়েছে বাংলার মানুষ। মনে রাখবেন বাংলায় রয়্য়াল বেঙ্গল টাইগার আছে।’

এখানেই শেষ নয়। বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, ‘যারা সাধারণভাবে নিজের এলাকাতেই জিততে পারে না তারা আবার বড় বড় কথা বলে! আমরা চাই শান্তি। ওরা চায় অশান্তি। আমরা চাই শিল্প, ওরা চায় দুর্ভিক্ষ। ওদের বিশ্রাম নেওয়ার সময় এসেছে। কাজ করতে জানে না, কাজ করতে পারে না। সবুজ সাথী, শিক্ষাশ্রী সব করেছি আমরা। বাংলা দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিল। এখন উন্নয়নের শিখরে উঠেছে। যারা ভাষা জানে না, এনআরসি আন্দোলন করলে গুলি করে মারে, কোভিডে মারা গেলে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয় তারা আবার কথা বলে কী করে। বিজেপি বলেছিল অব কি বার ২০০ পার। এবার অব কি বার পগার পার হবে।’

দুই বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য সভায় আমাদের বহু সদস্যকে সাসপেন্ড করে রেখেছে। যেখানে একটা ভোটও ম্যাটার করে। দিল্লি এক আর বাংলায় আরেক? আমাদের সাংসদদের সাসপেন্ড করেছে, তবে বাংলা কেন ব্যতিক্রম হবে?’

মুখ্যমন্ত্রী যখন কথা বলছিলেন, তখনও ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি বিধায়করা। তবে, যাঁদের ঘিরে আজকের বিক্ষোভ, সেই সাসপেন্ড হওয়া দুই বিজেপি বিধায়ক অবশ্য এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তাঁরা জানিয়েছেন, বিরোধী দলনেতার সঙ্গে আলোচনা করেই, তাঁরা তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন।