রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

‘লড়াইয়ের সেই আগুন এখনও আমার মধ্যে জ্বলছে’! সিঙ্গুর অনশনের ১৬ বছরে টুইট মুখ্যমন্ত্রীর

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২২, ০৮:০২ পিএম | আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০২২, ০২:১৮ এএম

‘লড়াইয়ের সেই আগুন এখনও আমার মধ্যে জ্বলছে’! সিঙ্গুর অনশনের ১৬ বছরে টুইট মুখ্যমন্ত্রীর
‘লড়াইয়ের সেই আগুন এখনও আমার মধ্যে জ্বলছে’! সিঙ্গুর অনশনের ১৬ বছরে টুইট মুখ্যমন্ত্রীর

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দিনটা ২০০৬ সালের ৪ ডিসেম্বর। আজ থেকে ১৬ বছর আগে এমনই এক শীতের কলকাতায় মেট্রো চ্যানেলে অনশনে বসেছিলেন তৎকালীন সময়ের বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মতলার সেই মঞ্চ থেকেই আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর দাবি ছিল, কৃষকদের সম্মতি ছাড়া সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। সেই ডিসেম্বরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আন্দোলন বাংলায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই আন্দোলনের ঝড়ে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ছারখার হয়ে গিয়েছিল ৩৪ বছরের একটানা বাম রাজত্ব।

আজ সেই বিশেষ দিন, ৪ ডিসেম্বর। এই দিনটিকে স্মরণ করে টুইট করলেন বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন টুইট করে তিনি লেখেন, ‘আজ থেকে ঠিক ১৬ বছর আগে সিঙ্গুরের কৃষক ও গোটা দেশের জন্য আমি আমার অনশনের লড়াই শুরু করেছিলাম। শক্তির কাছে যারা অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়ানো আমার নৈতিক কর্তব্য ছিল। লড়াইয়ের সেই আগুন এখনও আমার মধ্যে জ্বলছে। আমি কোনওদিন ভয় দেখিয়ে মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে দেব না।’‍‍

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে বামেরা বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রথম সাংবাদিক বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবু ঘোষণা করেন যে, এ রাজ্যে গাড়ির কারখানা তৈরি করতে চলেছে টাটা। সিঙ্গুরে টাটা তাঁদের ১ লাখের ন্য়ানো গাড়ির কারখানা তৈরি করবে। পরে একথা জানান রতন টাটা। সিঙ্গুরে ৭০০ একর জমিতে গাড়ির কারখানা ও ৩০০ একর জমিতে তার অনুসারি শিল্প গড়ে উঠবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই বছরের মে মাস থেকেই জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কৃষকদের হয়ে পথে নামেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে মমতার সরকারের কাছে দাবি করেছিলেন, কোনওভাবেই কৃষক স্বার্থকে লঙ্ঘন করা যাবে না।

৪ ডিসেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অনশনের শুরু করেন তা ২৬ দিন ধরে চলে। ততদিনে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের মানুষের সমর্থন ছিল মমতার সঙ্গে। বাম সরকারের তীব্র নিন্দায় পথে নামেন ছাত্র-যুব থেকে অশীতিপর বৃদ্ধও। এরপরই বদলের শুরু। বঙ্গ রাজনীতির পালাবদলের সূত্রপাত এই ঘটনা থেকেই। এরপরই দু’বছরের মধ্যে জোর থেকে আরও জোরাল হল আন্দোলন। আন্দোলনের জেরে ২০০৮ সালের অক্টোবরে সিঙ্গুর ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন রতন টাটা। এরপরই ঘটে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে রাজ্যে হল পালাবদল। তৃণমূল এল রাজ্যের ক্ষমতায়।

চলতি বছর অক্টোবরে শিলিগুড়ির এক অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, “কেউ কেউ বাজে কথা বলে বেড়াচ্ছে, আমি টাটাকে নাকি তাড়িয়ে দিয়েছি। টাটাকে আমি তাড়াইনি, সিপিএম তাড়িয়েছে। আপনারা লোকের জমি জোর করে দখল করতে গিয়েছিলেন। আমরা জমি ফেরত দিয়েছি। জায়গার তো অভাব নেই। আমি জোর করে কেন জমি নেব? আমরা এত প্রোজেক্ট করেছি, কই জোর করে তো জমি আমরা নিইনি। আমি পরিষ্কার করে বলি, আমাদের এখানে যত শিল্পপতি রয়েছেন, কারও মধ্যে ভেদজ্ঞান করি না। আমরা প্রত্যেককে চাই। তাঁরা বাংলায় বিনিয়োগ করুক। বিনিয়োগ করে এখানে দরকার হলে অনেক কর্মসংস্থান তৈরি করুক।”