বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

যুব ক্রিকেটারদের চাপে রাখতেন কুম্বলে! বোর্ডের কাছে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন কোহলি

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২২, ০৭:৪৭ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২২, ০১:৪৭ এএম

যুব ক্রিকেটারদের চাপে রাখতেন কুম্বলে! বোর্ডের কাছে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন কোহলি
যুব ক্রিকেটারদের চাপে রাখতেন কুম্বলে! বোর্ডের কাছে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন কোহলি

বিশ্ববন্দিত ব্যাটার তথা প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে অনিল কুম্বলের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কথা আজ কারোর অজানা নয়! ২০১৬ সালে টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচের দায়িত্ব পেয়েছিলেন কুম্বলে। তবে কোহলির সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে এক বছর পরই সে দায়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেট মহলে কোহলি-কুম্বলে দ্বৈরথ নিয়ে আজও চাপা গুঞ্জন শোনা যায়। সেই বিতর্কের আগুনেই এবার ঘি ঢাললেন বিনোদ রাই।

বিনোদ রাই একজন আইএএস অফিসার যিনি ভারতের কম্পট্রোলার এবং অডিটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৭ সালে, সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে বিসিসিআই-এর কার্যকারিতা তত্ত্বাবধানের জন্য প্রশাসক কমিটির (COA) প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেছিল।  ২০১৯ সালের শেষের দিকে COA ক্ষয়প্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত রাই এই ভূমিকায় কাজ করেছিলেন। সেই তিনিই এবার নিজের বই ‘নট জাস্ট আ নাইটওয়াচম্যান’-এ এক বিস্ফোরক ঘটনা তুলে ধরেছেন।

সেই বইতে বিনোদ রাই জানিয়েছেন, বিরাট কোহলি নাকি ক্রিকেট কমিটি অফ এডমিনিস্ট্রেশন-এর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন এই বলে যে, কুম্বলে যেভাবে দল পরিচালনা করতেন তাতে জাতীয় দলের যুব ক্রিকেটাররা বেশ চাপে থাকত। কুম্বলে তারা সকলে খানিক ভয় পেত। এরপরই কুম্বলের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি জানিয়েছিলেন, দলের স্বার্থেই তাঁর কাজকর্ম।

বিনোদ রাই লিখেছেন, "অধিনায়ক এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আমার কথোপকথনে, এটি বোঝানো হয়েছিল যে কুম্বলে খুব বেশি শৃঙ্খলাবাদী ছিলেন এবং তাই দলের সদস্যরা তাঁকে নিয়ে খুব বেশি খুশি ছিলেন না। আমি এই বিষয়ে বিরাট কোহলির সঙ্গে কথা বলেছিলাম এবং তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে দলের তরুণ সদস্যরা কুম্বলের সঙ্গে কাজ করতে ভয় পান।"

রাই আরও লিখেছেন "কুম্বলে অনুভব করেছিলেন যে তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। কুম্বলে যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে আসার পরে তাঁর সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ কথোপকথন হত।  পুরো বিষয়টি নিয়ে তিনি স্পষ্টতই বিরক্ত ছিলেন। ওঁর মনে হয়েছিল ওঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। একজন অধিনায়ক বা দলকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। কোচের দায়িত্ব ছিল দলে শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্ব আনা এবং একজন সিনিয়র হিসেবে তাঁর মতামতকেই খেলোয়াড়দের সম্মান করা উচিৎ ছিল।"

সেই সময় বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শচীন তেন্ডুলকর, ভিভিএস লক্ষ্মণের মত প্রাক্তনীরা। তাঁদের সঙ্গেও কোহলি-কুম্বলের সঙ্গে আলাদা করে কথা হয়। রাই লেখেন, "উপদেষ্টা কমিটির মনে হয়েছিল, পরিস্থিতি যথেষ্ট গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। এতটাই যে সিওএ (ক্রিকেট কমিটি অফ এডমিনিস্ট্রেশন) তরফে দুজনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন। পরিস্থিতি সমাধান করতে শীঘ্রই সিওএ-র লন্ডনে দুজনের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলে। তিনদিন আলোচনার পরে কুম্বলের নাম হেড কোচ হিসেবে পুনর্নিয়োগে সুপারিশ করা হয়।”

তবে এরপরই কুম্বলে হেড কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১৭ সালে ভারত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ফাইনালে হারার পরেই হেড স্যারের দায়িত্ব ছাড়েন কিংবদন্তি লেগ স্পিনার। তাঁর জায়গায় কোচ হয়ে আসেন রবি শাস্ত্রী।