শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

‘অগ্নিপথ’ বিতর্কে অগ্নিগর্ভ ভারত! জানেন কি আর কোন কোন দেশে এই রকম প্রকল্প চালু রয়েছে?

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২, ০৮:৩২ এএম | আপডেট: জুন ১৮, ২০২২, ০২:৩২ পিএম

‘অগ্নিপথ’ বিতর্কে অগ্নিগর্ভ ভারত! জানেন কি আর কোন কোন দেশে এই রকম প্রকল্প চালু রয়েছে?
‘অগ্নিপথ’ বিতর্কে অগ্নিগর্ভ ভারত! জানেন কি আর কোন কোন দেশে এই রকম প্রকল্প চালু রয়েছে? / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জের এখনও অব্যাহত। চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার এই প্রকল্পের ঘোষণা করে কেন্দ্র। এরপর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ আন্দোলন, মিছিল। ব্যাহত হয় সড়ক ও রেল পরিষেবা। বহু জায়গায় ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। লোকাল, এক্সপ্রেস ট্রেনের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় রেলস্টেশনেও। বলাবাহুল্য গোটা দেশজুড়ে একপ্রকার ধ্বংসলীলা চালায় আন্দোলনকারীরা।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেনা নিয়োগের পদ্ধতি, তাদের কাজের স্থায়িত্বতে আসবে নতুনত্ব। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর লোকবল অক্ষুন্ন রেখেই অস্থায়ী পদে সেনা নিয়োগ করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় নিযুক্ত জওয়ানদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। যে কোনও আগ্রহী তরুণ-তরুণীরা অগ্নিবীর হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারবেন। প্রত্যেকের নূন্যতম বয়স ১৭.৫ বছর ও সর্বোচ্চ বয়স ২১ বছর হতে হবে। তবে কেবলমাত্র এই বছরের জন্য বয়সের সর্বোচ্চ সীমা ২৩ বছর করা হয়েছে। অগ্নিবীরদের বার্ষিক বেতনসীমা ৪.৭৬ লক্ষ টাকা থেকে ৬.৯২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। চার বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে নিয়োজিত অগ্নিবীরদের ২৫ শতাংশ সেনা স্থায়ী কমিশন পাবেন। বাকি ৭৫ শতাংশদের প্রত্যেককে এককালীন ১১.৭ লক্ষ টাকা ভাতা দেওয়া হবে।

‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ দিতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। এতে একগুচ্ছ সুবিধা মিললেও এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে কেবলমাত্র ভারতবর্ষেই নয়, এই প্রকল্পের মতো বহু প্রকল্প চালু রয়েছে বিশ্বের একাধিক দেশে। সেসব দেশে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের ন্যায় পদ্ধতিতে সেনা নিয়োগ হয়ে থাকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ী পদে সেনা নিয়োগের পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। সেখানেও প্রথমে চার বছরের জন্য জওয়ানরা নিয়োজিত হন। সেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে পূর্ণ মেয়াদের চাকরির জন্য তাঁরা আবেদন করতে পারেন। ২০ বছর চাকরি করলে অবসর গ্রহণের পর পেনশন সহ অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন তাঁরা।

একই নিয়ম চালু রয়েছে চিনেও। তবে চিনে জনসংখ্যা অত্যাধিক বেশি হওয়ায় দু‍‍`বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে সেনা নিয়োগ করা হয়। প্রথম ক্ষেত্রে ৪০ দিনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর দু’বছর অতিক্রান্ত হলে কিছু শতাংশ সেনাকে পূর্ণ মেয়াদের জন্য নিযুক্ত করা হয়। অন্যদিকে দু’বছর পর অবসর গ্রহণকারী সেনারা যাতে ব্যবসা করতে পারেন সেই কথা ভেবে তাঁদের খুব অল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়।

অন্যদিকে রাশিয়াতে যুবকদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়মটা কিছুটা আলাদা। সেক্ষেত্রে এক বছর চলে প্রশিক্ষণ পর্ব এবং পরের এক বছরের জন্য তাদের নিয়োগ করা হয়। এরপর যোগ্যতার বিচারে পূর্ণ মেয়াদের জন্য বেছে নেওয়া হয় বেশ কয়েকজনকে।

ইজরায়েলে এই নিয়মটি আরও অন্যরকম। সে দেশের প্রত্যেক পরিবার থেকে অন্ততপক্ষে একজনের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে যুবকদের ৩২ মাস এবং যুবতীদের ২৪ মাসের জন্য নিযুক্ত করা হয়। এরপর তাঁদের আবার রাখা হয় সংরক্ষিত তালিকায়। যখন প্রয়োজন হয় তখনই তাঁদের কাজে লাগায় সরকার। সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত মোট সেনা সংখ্যার ১০ শতাংশকে সাত বছর পূর্ণ মেয়াদের জন্য নিয়োগ করা হয়।