শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

যে দেশে কখনই দেরিতে চলে না কোনও ট্রেন! দেরি হলেই যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চায় খোদ রেল কর্তৃপক্ষ

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৩, ১১:৪৩ এএম | আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২৩, ০৫:৪৩ পিএম

যে দেশে কখনই দেরিতে চলে না কোনও ট্রেন! দেরি হলেই যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চায় খোদ রেল কর্তৃপক্ষ
যে দেশে কখনই দেরিতে চলে না কোনও ট্রেন! দেরি হলেই যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চায় খোদ রেল কর্তৃপক্ষ

আমাদের দেশে গণপরিবহনের ক্ষেত্রে অন্যতম হচ্ছে রেলপথ। রেলকেই প্রতিদিন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। আর দেশের রেল পরিষেবাকে উন্নত করে তুলতে প্রায় একাধিক নিত্যনতুন পরিকল্পনা করতে দেখা যাচ্ছে এ দেশের সরকারকে। তবে তা সত্ত্বেও বেশ কিছু সময় রেলযাত্রায় নানারকম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় যাত্রীদের। তার মধ্যে অন্যতম, ট্রেন লেট করে চলা বা দেরিতে আসা।

বিশেষত শীতকালে প্রায়দিনই দেখা যায়, কুয়াশার কারণে বেশ দেরিতে চলছে ট্রেন। এমনকি প্রতিদিন একাধিক ট্রেন বাতিলও থাকে৷ গত কয়েকদিন ধরেই এমনটা দেখা যাচ্ছে। ট্রেন দেরি করে চলাটা যেন রোজকার রুটিনে পরিণত হয়েছে। এই নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষকেও তেমন মাথা ঘামাতে দেখা যাচ্ছে না।

এ তো এই দেশের কথা! কিন্তু এটা জানেন কি, বিশ্বে এমন একটি দেশ রয়েছে যে দেশে একেবারেই দেরিতে চলে না ট্রেন৷ এমনকি কোনও কারণবশত ট্রেন এক মিনিটও লেট করলে যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এক্কেবারে ট্রেনের টাইম টেবিলের সঙ্গে কাঁটায় কাঁটায় মিলিয়ে চলে সেই দেশের ট্রেনগুলি।

নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে কী সেই দেশ? দেশটি আমাদের চিরপরিচিত, জাপান। জাপানে কোনও ট্রেন কোনও দিন দেরিতে চলে না। যদি কখনও ট্রেন দেরিও করে, তা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্যই। এখনও অবধি জাপানের বুলেট ট্রেন কখনও ৩৬ সেকেন্ডের বেশি দেরি করেনি। ট্রেনের টাইমের সঙ্গে যাত্রীরা তাদের ঘড়ি মিলিয়ে দেখে নেন।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে ২০২০ সালের নভেম্বরের একটি ঘটনার কথা। সেবার টোকিও এবং রাজধানীর উত্তর অংশের সঙ্গে সংযোগকারী সুকুবা এক্সপ্রেস লাইনের একটি ট্রেন ২০ সেকেণ্ড দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছায়। ফলে বেশ কিছু যাত্রী ট্রেন মিসও করেন। কিছু যাত্রী আবার পরের স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এহেন ঘটনায় পরে দুঃখ প্রকাশও করেন রেলের কর্মকর্তারা।

আসলে জাপানে সঠিক সময় মেনে ট্রেন চলাচলের পিছনে রয়েছে সে দেশের মানুষদের দায়বদ্ধতা। জাপানিজরা সবসময় সব কিছু সময় মতো করতে ভালোবাসেন। তা সে কাজকর্ম থেকে শুরু করে খাওয়াদাওয়া বা ঘুম! রুটিন মেনে সময় ধরে ধরে সব কাজ করেন তারা। সরকারি হোক বা বেসরকারি, সমস্ত দপ্তরেই তাই ঘড়ির টাইম মিলিয়ে কাজ হয়। এক সেকেন্ড দেরিও হয় না কোনও কাজে।

আসলে, প্রতিটা দেশেরই নিজস্ব কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। আর জাপানের বিশেষত্ব হচ্ছে সময়ানুবর্তিতা। এটাই বাকিদের থেকে আলাদা করে দেয় এই দেশটিকে।