শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

নেই কোনও রেলস্টেশন! তবু বছরে ১ দিন এই জায়গায় দাঁড়ায় ট্রেন, কেন জানেন?

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২২, ০৭:১৫ পিএম | আপডেট: জুলাই ১০, ২০২২, ০১:১৭ এএম

নেই কোনও রেলস্টেশন! তবু বছরে ১ দিন এই জায়গায় দাঁড়ায় ট্রেন, কেন জানেন?
নেই কোনও রেলস্টেশন! তবু বছরে ১ দিন এই জায়গায় দাঁড়ায় ট্রেন, কেন জানেন?

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ও এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক হল, ভারতীয় রেল (Indian Railways)। প্রতিদিন দেশের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কাছে সফরের অন্যতম ভরসা এই রেলপথ। এদিকে রেলপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রেলস্টেশন৷ কারণ ট্রেনগুলি এই রেলস্টেশনেই স্টপেজ দেয়৷ সেখান থেকে ট্রেনে উঠতে পারেন যাত্রী৷ বর্তমানে দেশে রেলস্টেশনের সংখ্যা মোট ৭৩৪৯টি। এই প্রতিটি স্টেশনেই কোনও না কোনও ট্রেন এসে দাঁড়ায়৷ আর ফলে নির্ঝঞ্ঝাটে যাতায়াত করতে পারেন যাত্রীরা।

তবে এটা জানেন কি যে, আমাদের এই রাজ্যেই এমন এক জায়গা রয়েছে যেখানে কোনও রেলস্টেশন নেই! তা সত্ত্বেও বছরের একটি দিন প্রতিটি ট্রেনই স্টপেজ দেয় সেখানে। তার কারণ জানলে অবাক হতেই হয়! পশ্চিমবঙ্গের অন্ডাল-সাঁইথিয়া রেল লাইনের একটি নির্দিষ্ট জায়গাতেই বছরের ওই একটি দিন দাঁড়ায় সকল ট্রেন। যাত্রীরাও ওইদিন নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারেন।

আসলে প্রত্যেক বছর বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত দুবরাজপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে আয়োজিত হয় আলম বাবার উরস। শতাব্দী প্রাচীন আলম বাবার এই মাজার রয়েছে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং অন্ডাল-সাঁইথিয়া রেল লাইনের পাশেই। প্রতিবছর আষাঢ় মাসের চতুর্থ শুক্রবার এই মেলা আয়োজিত হয়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে পুণ্যার্থীরা এসে ভীড় জমান সেখানে। হিন্দু মুসলিম সব সম্প্রদায়ের মানুষরাই এখানে আসেন আলম বাবার আশীর্বাদ নিতে। নিজেদের প্রার্থনা জানিয়ে বাবাকে চাদর চড়ান৷ এমনকি বাংলাদেশ থেকেও অজস্র পূর্ণার্থীদের আগমন ঘটে।

ঠিক এই কারণেই প্রতিবছর আলম বাবা মাজার সংলগ্ন রেল লাইনে স্টেশন না থাকা সত্ত্বেও বছরের একটি দিন প্রতিটি ট্রেন দাঁড়ায় সেখানে। এই রুটে চলাচল করা লোকাল হোক বা এক্সপ্রেস ট্রেন, সবই ওই নির্দিষ্ট দিনে সেখানে স্টপেজ দেয়। ট্রেনগুলিকে নির্দিষ্ট জায়গায় থামানোর জন্য লাইনের পাশে ধর্মীয় পতাকা নাড়া হয়। ওই পতাকা দেখেই স্টপেজ দেয় ট্রেনটি। পুণ্যার্থীদের ওঠা-নামা শেষ হলে ফের ট্রেন ছেড়ে দেয়৷ এভাবেই চলে আসছে বছরের পর বছর।

এই বিশেষ দিনে বহু দূর-দূরান্ত থেকে মানুষরা আসেন আলম বাবা মাজারে। সেই কারণেই তাদের সুবিধার্থে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান মাজারের খাদিম মহঃ পিরু শা। উল্লেখ্য, করোনা আবহে বিগত দু‍‍`বছর ধরে বন্ধ ছিল এই মেলা। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় এবছর ফের মেলার আয়োজন করা হয়৷ আর সেখানে উপচে পড়ে ভীড়!