বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

জানেন কেন ১৫ অগাস্টই পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস? জানুন আসল কারণ

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২২, ০৬:৩৪ পিএম | আপডেট: আগস্ট ১৬, ২০২২, ১২:৩৬ এএম

জানেন কেন ১৫ অগাস্টই পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস? জানুন আসল কারণ
জানেন কেন ১৫ অগাস্টই পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস? জানুন আসল কারণ / প্রতীকী ছবি

আজ, ১৫ অগাস্ট, ভারতের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন হয় আমাদের দেশ। বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর কঠিন লড়াইয়ের ঘাম-রক্তের বিনিময়েই মিলেছে আজকের এই স্বাধীনতা। তাঁদের আত্মত্যাগ, বলিদানেই আজ ভারত হয়ে উঠেছে বিশ্বের বৃহত্তম এক গণতন্ত্র। সেই উপলক্ষ্যে প্রতি বছর ১৫ অগাস্ট পালিত হয় ভারতের স্বাধীনতা দিবস। 

এই বিশেষ দিনে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয় দেশ-মাতৃকাকে। স্মরণ করা হয় আত্মত্যাগী বীর বিপ্লবীদের। চলতি বছরে ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেশ জুড়ে উদযাপিত হতে চলেছে নানা অনুষ্ঠান। পালন হচ্ছে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ কর্মসূচী এবং `হর ঘর তিরঙ্গা‍‍‍‍`। দেশের অধিকাংশ মানুষই সামিল হয়েছেন এই কর্মসূচীতে। কিন্তু জানেন কি কেন ১৫ অগাস্টই পালিত হয় ভারতের স্বাধীনতা দিবস? কেন এই দিনটিকেই ভারতের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল?

এর আগে ২৬ জানুয়ারি স্বাধীনতা দিবস পালন করা হত। ১৯৩০ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ২৬ জানুয়ারির দিনটিকেই পরাধীন ভারতের ‍‍`স্বাধীনতা দিবস‍‍` বলে মেনে আসা হত। তাহলে কবে তা বদলালো? কবে ১৫ অগাস্ট হল এই দেশের স্বাধীনতা দিবস? কেন? তা জানার জন্য আমাদের চোখ বোলাতে হবে ইতিহাসের পাতায়।

সালটা ১৯২৮। অখণ্ড ভারত জুড়ে তখন স্বাধীনতা আন্দোলনের ঢেউ। জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি তখন মতিলাল নেহেরু। একবছর আগেই প্রাণ হারিয়েছেন লালা লাজপত রাই। তাঁর মৃত্যুতে স্বাধীনতার দাবী আরও জোরদান হয়ে উঠেছে বিপ্লবীদের মিলিত স্লোগানে। সে সময় মতিলাল নেহেরুর তত্ত্বাবধানে প্রকাশ করা হয় নেহেরু রিপোর্ট। কি ছিল সেই রিপোর্টে? স্বাধীনতা দাবী। তবে সে দাবী ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজের অধীনে থেকেই কংগ্রেসের নিজস্ব সরকার গড়ে তোলার। কিন্তু তা কার্যকর হল না তখন।

পরের বছর, ১৯২৮ সালে কংগ্রেসের সভাপতির পদে এসে মতিলালের পুত্র জওহরলাল নেহেরু আগেকার নেহেরু রিপোর্টকে বাতিল করে দিলেন। তিনি দাবি তুললেন পূর্ণ স্বরাজের। ব্রিটিশ শাসনের অধীনে না থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন এক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেন তিনি। তাঁকে সমর্থন জানালেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, অরবিন্দ ঘোষ, বাল গঙ্গাধর তিলকের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও। এর পরের বছরই কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে পাশ করা হল পূর্ণ স্বরাজের কর্মসূচি। ঠিক হল ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থেকে ক্ষমতা দখলের লড়াই জারি রেখেই পালিত হবে ‍‍`স্বাধীনতা দিবস‍‍`। ক্ষমতা হস্তান্তরিত করার জন্য আর অপেক্ষায় যেতে নারাজ তাঁরা।

পরিকল্পনা মতোই ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি সারা ভারত জুড়ে পালন করা হল ‍‍`পূর্ণ স্বরাজ দিবস‍‍`। কংগ্রেসের নেতৃত্বেই। এরপর থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ২৬ জানুয়ারির দিনটিকেই পরাধীন ভারতের ‍‍`স্বাধীনতা দিবস‍‍` বলে মেনে আসা হত। এরপর ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীন হল আমাদের এই দেশ। ভারতকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করার জন্য লর্ড মাউন্টব্যাটন নিজেদের ইচ্ছেমতো ১৫ অগাস্ট দিনটি বেছে নেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দিনই জাপান মিত্রশক্তির কাছে হার মানে। সে জন্যই ১৫ অগাস্ট দিনটি বেছে নেয় ব্রিটিশ সরকার।