রবিবার, ১২ মে, ২০২৪

মর্মান্তিক! কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ অ্যাসিড খাইয়ে পুত্রবধূকে ‘খুন’ শাশুড়ির

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২, ০৪:৫৬ পিএম | আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২২, ১০:৫৬ পিএম

মর্মান্তিক! কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ অ্যাসিড খাইয়ে পুত্রবধূকে ‘খুন’ শাশুড়ির
মর্মান্তিক! কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ অ্যাসিড খাইয়ে পুত্রবধূকে ‘খুন’ শাশুড়ির / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সমাজ যতই উন্নত হোক না কেন, কন্যাসন্তানকে আজও অনেকে পরিবারের ‘বোঝা’ বলে মনে করেন। সন্তান মেয়ে হবে না ছেলে, এই পুরো বিষয়টি নির্ভর করে বাবার উপর। তবুও চরম ‘অশিক্ষা’র দরুন কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাকেই দায়ী করা হয়। এমনকি কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ গৃহবধূ হত্যার নিদর্শনও আমাদের দেশে রয়েছে। ঠিক এমনই এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী রইল অসম। কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ায় অ্যাসিড খাইয়ে পুত্রবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠল শাশুড়ির বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম সুমনা বেগম। বয়স ২১। তাঁকে নির্মমভাবে খুন করার অভিযোগ ওঠে শাশুড়ি গোপালজান বিবির (৪৬) বিরুদ্ধে। দিনকয়েক আগে সুমনা এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু শাশুড়ি বরাবরই চাইতেন তাঁর নাতি হোক। তাই মেয়ের জন্ম দেওয়ায় বিষয়টি একেবারেই মেনে নিতে পারেনি শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।

এরপর থেকেই শুরু হয় অকথ্য অত্যাচার। মানসিক অত্যাচারের পাশাপাশি চলে শারীরিক অত্যাচারও। মঙ্গলবার তা সমস্ত সীমা অতিক্রম করে যায়। অভিযোগ, সেদিন ভাতের সঙ্গে অ্যাসিড মিশিয়ে জোর করে তা সুমনাকে খাওয়ানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় রক্তবমি। তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর সুমনার কাকা জালিল আলী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাতাবাড়ি থানায়। তাঁর অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই সুমনার শাশুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই প্রসঙ্গে থানার ওসি উত্তম অধিকারী জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গত ১২ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছে মৃতার শাশুড়িকে। অভিযুক্ত গোপালজান বিবি এবং তাঁর দুই সন্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অন্যদিকে সুমনার মরদেহ ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে করিমগঞ্জ হাসপাতালে।

এই প্রসঙ্গে জালিল আলীর বক্তব্য, গোটা ঘটনায় সুমনার শাশুড়ি গোপালজান ছাড়াও জড়িয়ে রয়েছে স্বামী শাকিল এবং শশুরবাড়ির বেশ কয়েকজন সদস্যরাও। তাঁর কথায়, সুমনার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রথম থেকেই চাইতেন পুত্রসন্তান হোক। কিন্তু কয়েকদিন আগে সুমনা কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এটা মেনে নিতে না পেরেই তাঁর উপর অত্যাচার শুরু হয়। জোর করে ভাতের সঙ্গে অ্যাসিড খাওয়ানো হয়। রক্ত বমি করতে করতেই মারা যান সুমনা।