রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ্যে! বছরে আড়াই ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে যোশীমঠ ও তৎসংলগ্ন এলাকা

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৩, ১০:২২ এএম | আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২৩, ০৪:২২ পিএম

ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ্যে! বছরে আড়াই ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে যোশীমঠ ও তৎসংলগ্ন এলাকা
ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ্যে! বছরে আড়াই ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে যোশীমঠ ও তৎসংলগ্ন এলাকা

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ইতিমধ্যেই যোশীমঠকে সরকারিভাবে ‘ডুবন্ত শহর’ বলে ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। যোশীমঠকে আতঙ্ক উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। উত্তরাখণ্ড পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই ছোট্ট শহরের সর্বত্রই এখন বড়বড় ফাটল। যা ক্রমশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চওড়া হয়ে চলেছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ঘোষণা করেছেন যে, এই শহর আর বসবাসের উপযুক্ত নয়। এখানকার পৌর এলাকাগুলিকে ‘বিপর্যস্ত’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আরও ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ্যে এল। বছরে প্রায় আড়াই ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে যোশীমঠ এবং তার সংলগ্ন এলাকাও।

এছাড়াও যোশীমঠের সাম্প্রতিকতম বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথও। উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার যোশীমঠ-মালারি বর্ডার রোড এই এলাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করে চিনা বর্ডারকে। সেই সীমান্তগামী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথের একাধিক জায়গায় দেখা দিয়েছে ধস। সেই কারণেই এই সড়কপথের বহু জায়গাতেই বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে। এই বিষয়টিও চিন্তায় রেখেছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসনকে। 

গত ২ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে এমনটাই দাবি করেছেন দেরাদুনের ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং। উপগ্রহের ছবি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এমনটাই দাবি করেছে ওই প্রতিষ্ঠান। এই মুহূর্তে যোশীমঠের অস্তিত্বই সংকটের মুখে। উত্তরাখণ্ডের বুকে থাকা এই মন্দির শহরের শতাধিক বাড়িতে বড় বড় ফাটল ধরেছে। ক্রমশ সেই ফাটল আরও চওড়া হচ্ছে। ফাটল দেখা দিয়েছে রাস্তাতেও। যোশীমঠের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা তপোবন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দিকেই আঙুল তুলেছেন।

২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত উপগ্রহ চিত্র থেকেই এটা পরিষ্কার যে, ধীরে ধীরে বসে যাচ্ছে যোশীমঠ এবং তার আশপাশের এলাকা। উপগ্রহ চিত্রের উপরে লাল বিন্দুগুলি যেখানে রয়েছে, সেই এলাকাগুলিই ক্রমশ বসে যাচ্ছে বলেই দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে যে, যোশীমঠ ছাড়িয়ে তার আশেপাশের এলাকাগুলিতে ওই লাল বিন্দুগুলি ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে, একের পর এক বাড়ি খালি করা হচ্ছে। হাড় কাঁপুনি ঠাণ্ডার মধ্যেই ঘরছাড়া একাধিক পরিবার। যোশীমঠ যেন এখন কার্যত এক ডুবন্ত জাহাজ। ফাটল দেখা দিয়েছে শঙ্করাচার্য মঠেও। 

এদিকে, এখনও পর্যন্ত যোশীমঠের অন্তত ১১০ টি পরিবার শহর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোটা শহর খালি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে যোশীমঠের ৬৭৮ টি বাড়ি ছাড়াও একাধিক হোটেল এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও বড় বড় ফাটল ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার থেকে এই বিপজ্জনক নিরমাঙ্গুলি ভাঙার কাজ শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে, আবার শুধুমাত্র যোশীমঠ নয়, এই মন্দির শহরের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত কর্ণপ্রয়াগের বহুগুনা নগরেও অন্তত ৫০ টি বাড়িতে কত কয়েক মাসে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।