শনিবার, ১১ মে, ২০২৪

বন্যায় জলমগ্ন হাসপাতাল! অসমে রাস্তাতেই চলেছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর কেমো

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২২, ০১:৩৫ পিএম | আপডেট: জুন ২৮, ২০২২, ০৭:৩৮ পিএম

বন্যায় জলমগ্ন হাসপাতাল! অসমে রাস্তাতেই চলেছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর কেমো
বন্যায় জলমগ্ন হাসপাতাল! অসমে রাস্তাতেই চলেছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর কেমো

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অসমে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে অসম বন্যায়। এদিকে, পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ যে, রেহাই পেলে না ক্যানসার হাসপাতালও। এই মুহূর্তে ওই ক্যানসার হাসপাতাল জলের তলায়। এর জেরে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরাও। ধরা পড়ল এক করুণ ও অসহায় চিত্র। 

চারপাশে জল, আর তার মাঝেই এক ক্যানসার রোগীকে হাসপাতালের বাইরেই দেওয়া হল কেমোথেরাপি। ইতিমধ্যেই টানা ভারী বর্ষণের জেরে অসমের একাধিক জেলা জলমগ্ন। এর জেরে চরম দুর্দশার শিকার হাজার হাজার মানুষ। এই দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেলেন না ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও। বন্যায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বারাক উপত্যকার ১৫০ আসন বিশিষ্ট এক ক্যানসার হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্র। হাসপাতাল চত্বরে জল এতোটাই যে, রোগী থেকে শুরু করে হাসপাতালের কর্মীদের জন্য লাইফ জ্যাকেটের আবেদন করা হয়েছে। এদিকে, হাসপাতাল জলমগ্ন হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসাতেও গুরুতর প্রভাব পড়েছে। 

পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ যে, ন্যূনতম চিকিৎসা দেওয়ার মতো অবস্থা নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু অসুখ তো সেকথা মানবে না। মারণ ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য কেমো তো নিতেই হবে। তাই সবথেকে সমস্যায় পড়েছেন যে সমস্ত রোগীর কেমো শুরু হয়েছে। হাসপাতালের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে এলাকায় জল অপেক্ষাকৃত কম, সেখানেই ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের কেমোথেরাপি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই কারণে হাসপাতালের বাইরে খোলা আকাশের নীচে রোগীদের কেমো দেওয়া চলছে।

ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন যে, বন্যা পরিস্থিতির কারণে অপারেশন করাও সম্ভব হচ্ছে না। তবে, যাঁদের শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটজনক, তাঁদেরই শুধু অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। গত ১ সপ্তাহে মোট ৪ জন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়েছে। অথচ এই হাসপাতাল জলমগ্ন হয়ে পড়ার আগে সপ্তাহে ২০ টি অপারেশনও হয়েছে বলেই জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। এর সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায়, হাসপাতালে খাওয়ার জলেরও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায়, মজুত করা জ্বালানীতেও টান পড়েছে। এই অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে, পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়াও অসম্ভব হবে বলেই জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। 

অন্যদিকে, অসমের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। ব্রহ্মপুত্র নদীর আশপাশ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হলেও, কাছাড় এবং তাঁর পাশ্ববর্তী করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি জেলার পরিস্থিতি ভয়াবহ বলেই সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, বন্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও খবর।