সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

রেলস্টেশনের কুলি থেকে IAS অফিসার! রূপকথাকেও হার মানাবে শ্রীনাথের জীবন কাহিনী

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২২, ১০:২১ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ৮, ২০২২, ০৪:২১ এএম

রেলস্টেশনের কুলি থেকে IAS অফিসার! রূপকথাকেও হার মানাবে শ্রীনাথের জীবন কাহিনী
রেলস্টেশনের কুলি থেকে IAS অফিসার! রূপকথাকেও হার মানাবে শ্রীনাথের জীবন কাহিনী

ইচ্ছা থাকলে উপায়ও হয়। ইচ্ছাশক্তি ও মানসিক দৃঢ়তা থাকলে যে কোনও অসম্ভবকেই সম্ভব করে ফেলা যায়। চেষ্টা ও কঠোর অধ্যবসায়ের জেরে কোনও কঠিন কাজও যেন সহজ হয়ে ওঠে। আর ঠিক তেমনটাই করে দেখালেন কেরালার বাসিন্দা শ্রীনাথ কে। ছিলেন রেলস্টেশনের কুলি। সেই তিনিই আজ হয়ে উঠেছেন আইএএস অফিসার। তাঁর কাছে ছিল না ইউপিএসসির জন্য উপযুক্ত বই এমনকি তিনি সাহায্য পাননি কোন গাইডেরও। তাও শ্রীনাথ ছুঁয়েছেন সাফল্যের শিখর। হ্যাঁ এটাই সত্যি! তাঁর কাহিনী হার মানাবে রূপকথাকেও।

শ্রীনাথের এই অভাবনীয় সাফল্যের পিছনে লুকিয়ে আছে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইয়ের গল্প। শ্রীনাথ তার সাফল্যের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। শ্রীনাথ কে কেরালার মুন্নারের বাসিন্দা। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শ্রীনাথ তার ছেলেবেলা থেকেই পরিচিত অভাবের বিরুদ্ধে সংসার সীমান্তে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা লড়াইয়ের সঙ্গে। সময়ও শ্রীনাথ কে ভেঙ্গেচুরে গড়ে তুলছিল নিজের মত। পরিবারের অভাব মোচনের জন্য শ্রীনাথ একসময় কেরলের এরনাকুলামে কুলির কাজ শুরু করেন।

ততদিনে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা। শ্রীনাথই তখন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর কুলির কাজ করেন শ্রীনাথ, কিন্তু এই সামান্য উপার্জনে তার পরিবারের খুব একটা সুরাহা হচ্ছিল না। এদিকে ততদিনে শ্রীনাথের পরিবারে আগমন ঘটেছে এক নতুন সদস্যের, বাবা হয়েছেন শ্রীনাথ। ফলে অভাবের সংসারে আরও বেড়েছে টানাটানি।

সালটা ২০১৬, জানুয়ারি মাসে মুম্বই স্টেশনে শুরু হল ফ্রি ওয়াই ফাই পরিষেবা। এই ফ্রি ওয়াই ফাইয়ের সূত্রেই এরপর ঘুরতে শুরু করে শ্রীনাথের ভাগ্যের চাকা। পরবর্তী সময়ে কেরলের এনারকুলাম স্টেশনেও বিনামূল্যে ওয়াই ফাই পরিষেবা চালু হলে শ্রীনাথ তার লক্ষ্য পূরণের সুযোগ পান। ওয়াই ফাই পরিষেবাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা ইউপিএসসির প্রস্তুতি শুরু করেন শ্রীনাথ। স্টেশনের অন্যান্য কুলিরা শ্রীনাথের এই প্রচেষ্টার কথা জানতে পেরে তাঁকে সহায়তায় কোন খামতি রাখেননি।

যদিও একবারের চেষ্টায় শিকে ছেঁড়েনি শ্রীনাথের। কিন্তু ওই যে বলে না ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। সেইমতো চতুর্থ বারের প্রচেষ্টায় সফল হন কে শ্রীনাথ, শুধু তাই নয় তিনি পেয়েছেন প্রায় ৮২ শতাংশ নম্বর। এখন নিজের গ্রামের উন্নতির জন্য কাজ করতে চান তিনি। শ্রীনাথের এই ঘটনা আজকের যুবসমাজের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে!