সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪

গাজিয়াবাদের গণধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়! পুরোটাই সাজানো কাহিনি, দাবি পুলিশের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২২, ১০:২৬ এএম | আপডেট: অক্টোবর ২১, ২০২২, ০৪:২৬ পিএম

গাজিয়াবাদের গণধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়! পুরোটাই সাজানো কাহিনি, দাবি পুলিশের
গাজিয়াবাদের গণধর্ষণ কাণ্ডে নয়া মোড়! পুরোটাই সাজানো কাহিনি, দাবি পুলিশের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গাজিয়াবার ‘গণধর্ষণ’ মামলায় এবার নয়া মোড় সামনে এল। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে কোনও ধর্ষণের ঘটনাই ঘটেনি। গত মঙ্গলবার এক ৩৬ বছর বয়সী মহিলাকে একটি পাটের ব্যাগ গায়ে জড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ওই মহিলার হাত-পা বাঁধা ছিল এবং তাঁর গোপনাঙ্গে একটি লোহার রোড ঢোকানো ছিল বলেই জানা যায়।

গত বুধবার এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গাজিয়াবাদ পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতি মালিওয়াল। কিন্তু এই ঘটনা প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার অন্য কথা বলল পুলিশ। বৃহস্পতিবার পুলিশ দাবি করেছে, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের কারণে কয়েকজন পুরুষকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলেছিলেন ওই মহিলা। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উত্তরপ্রদেশের আঞ্চলিক পুলিশ প্রধান প্রবীণ কুমার বলেছেন, ‘তিনি যে দুই দিন ধরে তাঁকে পাঁচজন লোক অপহরণ ও ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন, ওই দুই দিন তিনি তাঁর দুই বন্ধুর সঙ্গে ছিলেন। মোবাইল সিগন্যাল ট্র্যাক করে দেখা গিয়েছে, আশ্রম রোডের কাছে যেখানে ওই মহিলাকে পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে তাঁর এক বন্ধু ফোন বন্ধ করে দিয়েছিল। অভিযোগটি ছিল পাঁচজন পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়েরের ষড়যন্ত্র। মহিলার বন্ধুদের মধ্যে একজন পেটিএম-এর মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে এই ধর্ষণের মামলার ব্যাপক প্রচারের জন্য অর্থ দিয়েছিল, তারও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।’

এখানেই শেষ নয়, পুলিশ কর্তা আরও জানিয়েছেন, ‘তিনি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে যে গাড়িতে গিয়েছিলেন এবং দু’দিন তাদের সঙ্গে ছিলেন, সেই গাড়িটিও আমরা উদ্ধার করেছি। বুধবার, তাঁকে উদ্ধার করার পর প্রথমে গাজিয়াবাদের এক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে মিরাটের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এই দুই জায়গাতেই তিনি নিজের ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে অস্বীকার করেন। পরে, তাঁর জোরাজুরিতেই বাধ্য হয়ে তাঁকে দিল্লির জিটিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে, সেই হাসপাতালের চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, তাঁর কোনও অভ্যন্তরীণ আঘাত নেই।’

উল্লেখ্য। ওই মহিলা প্রথমে দাবি করেছিলেন, গাজিয়াবাদে তিনি তাঁর ভাইয়ের জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন। পরে দিল্লি যাওয়ার জন্য তাঁর ভাই তাঁকে একটি বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দিয়েছিল। বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময়, একটি গাড়িতে করে পাঁচ ব্যক্তি তাঁকে অপহরণ করে এবং দুদিন ধরে আটকে রেখে তাঁকে লাগাতার পালা করে ধর্ষণ করে। মহিলার এই অভিযোগের ভিত্তিতেই একটি মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতারও করা হয় দ্রুত। ধর্ষণের এই মামলায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের দিকটিও উল্লেখ করা হয়েছিল।

কিন্তু তদন্তে নেমে আসল সত্য সামনে আসায়, পুরো বিষয়টির মোড় ঘুরে যায়, ওই মহিলার বন্ধুদেরও আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তিনটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, ধর্ষণ মামলায় এই নতুন তথ্য সামনে আসার পরে, দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতি মালিওয়ালের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, বুধবার গাজিয়াবাদ পুলিশকে পাঠানো নোটিসে স্বাতি বলেছিলেন এই ঘটনা তাঁকে দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।