সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি নিয়ে শীর্ষ আদালতেও ধাক্কা খেল বিজেপি!

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২, ০৩:০৬ পিএম | আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২, ০৯:০৭ পিএম

পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি নিয়ে শীর্ষ আদালতেও ধাক্কা খেল বিজেপি!
পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি নিয়ে শীর্ষ আদালতেও ধাক্কা খেল বিজেপি! / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যের বাকি ১০৮ পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য বিজেপি বৃহস্পতিবার। বিজেপির পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে আবেদনের শুনানিতে মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার ডিভিশন বেঞ্চ। আজ ছিল সেই মামলার শুনানি। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পুরভোট করানোর দাবি নিয়ে, সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা খেল বিজেপি। 

পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহারের দাবি নিয়ে পদ্ম শিবিরের করা মামলা খারিজ হয়ে গেল শীর্ষ আদালতে। কাজেই আগের পুরসভার নির্বাচনগুলির মতোই এবার আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাকি ১০৮ পুরসভার ভোটও রাজ্য পুলিশ দিয়েই হবে না কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে তা একমাত্র ঠিক করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনই। এদিকে, সূত্রের খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশন এই ১০৮ পুরসভার নির্বাচন রাজ্য পুলিশ নিয়েই করাতে চায়।  

কলকাতা হাইকোর্টের মতোই আসন্ন পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা বা না করার সিদ্ধান্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরই ছেড়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। চলতি সপ্তাহের বুধবারই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধানবিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় যে, ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাকি ১০৮ টি পুরসভার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই। তবে, আদালতের পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছে যে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট করালে সেই সিদ্ধান্তের পিছনে কী কারণ রয়েছে, তাও আদালতকে জানাতে হবে কমিশনকে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট হলে এবং তাতে অশান্তি হলে, তার সম্পূর্ণ দায় বর্তাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরে।

কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, বুধবার হাইকোর্টের রায়ে মোটেও খুশি ছিল না রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তাই এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম করতে মামলা দায়ের করতে পারে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব তা সেদিনই স্পষ্ট হয়েছিল। ২৭ ফেব্রুয়ারি পুরভোট। তার আগে বুধবারের পর জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি জানিয়েও শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব তা জানা গিয়েছিল। বুধবারের রায়ের পরই কার্যত বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয় রাজ্য বিজেপি। এ প্রসঙ্গে বিজেপির আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, ‘আমরা নির্দেশ পর্যালোচনা করছি। নির্দেশ খতিয়ে দেখার পরই কেন্দ্রীয় আইনজীবী সেলের সঙ্গে কথা বলে সুপ্রিম কোর্ট যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’ সেই অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয় বৃহস্পতিবার। বিজেপির পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে আবেদনের শুনানিতে মামলা দায়েরের অনুমতি দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার ডিভিশন বেঞ্চ। 

নিজেদের আবেদনে বিজেপি যুক্তি দেয় যে, এর আগে কলকাতা পুরসভার ভোট এবং চারটি পুরনিগমের ভোটেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহারের বিষয়টি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরেই ছেড়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু উক্ত দুটি নির্বাচনেই ভোট লুঠ হয়েছে, এছাড়াও আরও নানা অভিযোগ রয়েছে। তাই রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের আস্থার উপরে সুবিচার করতে পারেনি। তাই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।  

কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের সেই রায়ের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও, শুক্রবার বিজেপির করা সেই আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালতও কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ই বহাল রাখাল। অর্থাৎ পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী না রাজ্য পুলিশ, তা নির্বাচন কমিশনী ঠিক করবে। আর সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

অন্যদিকে, কমিশন সূত্রের খবর, ১০৮ পুরসভার ভোটের দায়িত্বে থাকবে রাজ্য পুলিশই। মোতায়েন করা হবে ৪৪ হাজার পুলিশ। ১০৮ টি পুরসভার প্রত্যেকটি বুথে থাকবে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতি বুথে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি বুথের বাইরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থকবে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, ইএফআর জওয়ান, র‌্যাফের তত্ত্বাবধানে।