বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪

সাধারণ আটপৌরে গৃহবধূ থেকে বডিবিল্ডার! ৪৭ বছর বয়সেও ফিটনেসে তাক লাগাচ্ছেন এই মহিলা

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: মে ২, ২০২২, ০৪:১৬ পিএম | আপডেট: মে ২, ২০২২, ১০:১৬ পিএম

সাধারণ আটপৌরে গৃহবধূ থেকে বডিবিল্ডার! ৪৭ বছর বয়সেও ফিটনেসে তাক লাগাচ্ছেন এই মহিলা
সাধারণ আটপৌরে গৃহবধূ থেকে বডিবিল্ডার! ৪৭ বছর বয়সেও ফিটনেসে তাক লাগাচ্ছেন এই মহিলা

ছিলেন রক্ষণশীল সাধারণ আটপৌরে এক গৃহবধূ। ঘর সংসারের কাজকর্ম সেরে নিজের দিকে খেয়াল দেওয়ার সময়ই পেয়ে উঠতেম না৷ ফলে ওজনও বেড়ে উঠছিল ক্রমশ। অল্পবয়সেই যেন বার্ধক্যের ক্লান্তি এসে গ্রাস করছিল তাঁকে। কিন্তু অবশেষে বদলাল দিন। পরিবার-পরিজন দায়িত্ব সমস্ত সামলেও নিজের জন্য সময় বের করে শুরু করলেন শরীর চর্চা৷ আর আজ তিনি দেশের অন্যতম এক ‍‍`ফিটনেস গুরু‍‍`! ৪৭ বছর বয়সেও এই মহিলার শারীরিক গঠন ও ফিটনেস তাক লাগিয়ে দেয় সকলকে।

নাম কিরণ ডেম্বলা। হায়দ্রাবাদের এক সাধারণ গৃহবধূ ছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে বিয়ের পর পরিবার এবং পরিজনের দায়িত্ব সামলাতে সামলাতে চাপা পড়ে যায় নিজেকে ভালো রাখার সকল প্রচেষ্টা। এরপর মা হন তিনি। প্রথমে এক মেয়ে ও তারপর এক ছেলের জন্মের পরই তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমে যায়। বহুকাল মেডিকেশনে ছিলেন তিনি। সেই মেডিকেশনে থাকাকালীন অবস্থায় শরীরের ওজন বাড়তে থাকে উত্তরোত্তর। এদিকে বাচ্চাদের দেখভাল, পরিবারের দায়িত্ব সামলেও আর নিজেকে সময়ও দেওয়া হয়ে উঠছিল না।

তবে গার্হস্থ্য জীবনের মাঝেই এক সময় কিরণ ঠিক করেন, অনেক হয়েছে, আর না! এবার কমাতেই হবে নিজের ওজন। আর নিজেকে ফিট রাখার তাগিদেই বাড়ির কাছের একটি জিমে ভর্তি হন তিনি। সেখানে বহু ফিটনেস সচেতন মানুষের সংস্পর্শে এসে নিজের ওজন কমানোর জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠেন ওই গৃহবধূ। ওজন কমানোর জন্য শুরু করেন বাড়তি পরিশ্রম। ঘর-সংসারের কাজ সামলেই এরপর জিম হয়ে ওঠে তাঁর নেশা।

এক সময় গিয়ে মাসল বানানোর কথা মাথায় আসে তাঁর এবং অল্প সময়ের মধ্যে সিক্স প্যাক অ্যাবসও বানিয়ে ফেলেন ওই গৃহবধূ। মহিলাদের মাসল বানানোর জন্য প্রোটিন ফুড খাওয়া জরুরি। তাই দিনে পাঁচবার খাবার খেতেন তিনি। খাদ্য তালিকায় থাকত চিকেন, ডিম, মাছ, ডাল। এছাড়া ফাইবার এর জন্য সবুজ সবজি, সেদ্ধ সবজিও ডায়েটে শামিল করেন। সেই সঙ্গে চলত এক্সারসাইজ। এভাবে প্রায় এক বছরের ২৪ কিলো ওজন কমিয়ে ফেলেন কিরণ। কিরণ ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লোকাল ফিটনেস ব্র্যান্ড।

বর্তমানে তিনি হয়ে উঠেছেন একজন সার্টিফায়েড ফিটনেস কোচ। অনলাইন এবং অফলাইনে গাইডেন্স দেন তিনি। ইতিমধ্যে হায়দ্রাবাদে ৩টি বড় জিমও খুলে ফেলেছেন কিরণ৷ সেখানে বহু সেলিব্রিটি তাঁর কাছে ট্রেনিং নেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বাহুবলী ছবির পরিচালক রাজামৌলি এবং নম্রতা ভাটিয়া। নিজেকে অ্যাক্টিভ রাখার জন্য তিনি এখনও রোজ ১২ ঘন্টা এক্সারসাইজ করেন। পাশাপাশি ঘরের সমস্ত কাজ যেমন বাসন মাজা, ঝাড়ু দেওয়া, ঘর মোছা ইত্যাদিও নিজেই করেন। শুধু তাই নয়,সঙ্গীতে আগ্রহী কিরণ মিউজিকে একটি প্রফেশনাল কোর্স করে হায়দ্রাবাদের স্থানীয় একটি ক্লাবে প্রফেশনাল ডিজে হিসেবে নিজের পরিচিতিও তৈরি করেছেন। তাঁর জীবনকাহিনী বহু মানুষের কাছেই এক অনুপ্রেরণা।