সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

প্রাক্তন BSF জওয়ানের অঙ্গদানে রক্ষা পেল ৩টি প্রাণ! চোখের জলে বিদায় সেনাকে

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২২, ০৯:৫৪ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২২, ০৩:৫৪ এএম

প্রাক্তন BSF জওয়ানের অঙ্গদানে রক্ষা পেল ৩টি প্রাণ! চোখের জলে বিদায় সেনাকে
প্রাক্তন BSF জওয়ানের অঙ্গদানে রক্ষা পেল ৩টি প্রাণ! চোখের জলে বিদায় সেনাকে / প্রতীকী ছবি

‘ব্রেন ডেড’ বলে ঘোষণা করেছিল দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স (AIIMS)। সেই প্রাক্তন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) জওয়ানের অঙ্গদানে বেঁচে উঠল তিনটি প্রাণ। AIIMS-দিল্লিতে ভর্তি এক রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন প্রাক্তন ওই জওয়ানের একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হল। অন্য একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর দেহে। অন্যদিকে, জওয়ানের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হল আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারাল (আরআর) হাসপাতালে ভর্তি অপর এক রোগীর শরীরে। ফলে বাঁচল তিন-তিনটি জীবন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন ওই জওয়ানের নাম রাকেশ কুমার৷ বয়স ৫২ বছর। তিনি ছিলেন উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের বাসিন্দা। গত ৩ অক্টোবর বাড়িতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মেরামতের সময় পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন ওই জওয়ান। তারপরে তাঁকে দ্রুত স্থানীয় ‘ট্রমা সেন্টারে’ নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে তাকেঁ দিল্লির ‘এইমস’-এ পাঠানো হয়।

৪ অক্টোবর সকালে দিল্লির AIIMS ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয় রাকেশ কুমারকে। এরপর তাঁর অস্ত্রোপচারও করেন চিকিৎসকরা৷ কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। গত ৬ অক্টোবর চিকিৎসকরা তাঁকে ব্রেন ডেড বলে ঘোষণা করেন। এরপরই অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা জওয়ানের ভাগ্নে, রাকেশ কুমারের অঙ্গদানের জন্য পরিবারকে রাজি করান। তিনি আসলে AIIMS ট্রমা সেন্টারের জরুরি মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র চিকিৎসক, তাই মামার অঙ্গদানের জন্য পরিবারকে রাজি করাতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে AIIMS সূত্রে জানানো হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে দিল্লি AIIMS-এর এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, "শুক্রবার সেনা বাহিনীর আরআর হাসপাতালের এক রোগীর শরীরে রাকেশের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়। তাঁর একটি কিডনি সফদরজং হাসপাতালের একজন রোগীর মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, অন্য কিডনিটি AIIMS-এ এক রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আর রাকেশের দুটি কর্নিয়া আগামী সপ্তাহে প্রতিস্থাপন করা হবে। তার জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে।”

অন্যদিকে, নিউরোসার্জারির অধ্যাপক ডঃ দীপক গুপ্ত জানান, দেশে প্রতি তিন মিনিটে একজন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। প্রতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা দেড় লাখ হলেও বছরে মাত্র ৭০০ অঙ্গ দান করা হয়। তাই অঙ্গদান সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাক্তন এই সেনা জওয়ানের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের খবর আরও বহুজনকে অনুপ্রেরণা যোগাতে সাহায্য করবে বলেই মনে করছে চিকিৎসা মহল।