সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

মুসলিম ডেলিভারি বয়ের হাতে খাবার নেবেন না, আজব দাবি গ্রাহকের! নিন্দায় মুখর নেটদুনিয়া

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২, ০২:০০ পিএম | আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২, ০৮:০০ পিএম

মুসলিম ডেলিভারি বয়ের হাতে খাবার নেবেন না, আজব দাবি গ্রাহকের! নিন্দায় মুখর নেটদুনিয়া
মুসলিম ডেলিভারি বয়ের হাতে খাবার নেবেন না, আজব দাবি গ্রাহকের! নিন্দায় মুখর নেটদুনিয়া

মুসলিম ডেলিভারি বয়ের হাত থেকে খাবার নেবেন না! এমনই এক আজব দাবি করলেন গ্রাহক। আর তার জেরে উত্তাল হয়ে উঠল সোশ্যাল মিডিয়া৷ সম্প্রতি হায়দ্রাবাদের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সরগরম হয়ে ওঠে নেটমাধ্যম। প্রতিবাদের ঝড় তোলেন নেটিজেনরা।

ঘটনাটি ঘটে ২৯ অগাস্ট বিকেলে। একজন গ্রাহক হায়দ্রাবাদের মহাদেবপুরীতে তার বাড়ি থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে একটি দোকান থেকে খাবারের অর্ডার দিয়েছিলেন। সুইগি অ্যাপের মাধ্যমে খাবার অর্ডার করে তিনি একটি মেসেজ লেখেন– ‘মুসলমান ডেলিভারি বয় যেন খাবার ডেলিভারি না করে’। আর সেই মেসেজ প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে গর্জে ওঠে নেটপাড়া।  গ্রাহকের অনুরোধের একটি স্ক্রিনশট রীতিমত ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ জন এর তীব্র  বিরোধিতা করছে। প্রায় সকলেই প্রতিবাদের ভাষায় লিখেছেন “খাবারের কোন জাত হয় না”।

তেলেঙ্গানার গাড়িচালক সংগঠনের অন্যতম পদাধিকারী শেখ সালাউদ্দিন ওই গ্রাহকের মেসেজের স্ক্রিনশট পোস্ট করেন। সালাউদ্দিন নিজেও একটি সংস্থার হয়ে বাড়ি বাড়ি খাদ্য সরবরাহ করে থাকেন। বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার কাছে অনুরোধ জানান। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘আমরা (অনলাইন খাদ্য সরবরাহকারী) হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, শিখ প্রত্যেক ধর্মের মানুষের কাছেই খাবার পৌঁছে দিয়ে থাকি।’ তিনি সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে এমন ধর্মবিদ্বেষী মন্তব্যের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

ফুড অ্যাপে এভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৯ সালে, একজন গ্রাহক Zomato থেকে খাবারের অর্ডার দিয়েছিলেন, কিন্তু ডেলিভারি বয় খাবার নিয়ে আসলে, গ্রাহক তার ধর্ম জানতে চান।  ডেলিভারি বয় যখন জানায় যে সে মুসলিম, তখন সেই গ্রাহক খাবার নিতে অস্বীকার করে। গ্রাহকের এই আচরণের পরে, Zomato সেই গ্রাহকের সমস্ত অর্ডার নিতে অস্বীকার করে। জোমাটোর এই সিদ্ধান্তের জন্য অনলাইনে প্রচুর চর্চাও হয়।। রাইডার পরিবর্তনের জন্য গ্রাহকের অনুরোধের জবাবে, কোম্পানি টুইট করেছিল – ‘খাবারের কোনও ধর্ম নেই’!

হায়দরাবাদের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর নিন্দায় সরব হয়েছেন বিশিষ্টরাও। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের পুত্র কার্তি চিদম্বরম এই ঘটনায় টুইট করে প্রশ্ন তোলেন, একের পর এক এমন ঘটনা ঘটার পরেও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? বহু নেটাগরিককে কার্তির মন্তব্যকে সমর্থন করতে দেখা যায়। সংস্থাটির তরফে অবশ্য এখনও সালাউদ্দিনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে প্রকাশ্যে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। তবে এই ঘটনা নতুন নয়। আগেও বেশ কয়েক বার ডেলিভারি বয়দের ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদের কাছ থেকে খাবার নিতে অস্বীকার করেছেন বহু মানুষ।