সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর অবসরকালীন ভাতায় চালান বৃদ্ধাশ্রম! ৯৪ বছরের বৃদ্ধকে কুর্নিশ নেটদুনিয়ার

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২, ০৯:৪৯ পিএম | আপডেট: ডিসেম্বর ১, ২০২২, ০৩:৪৯ এএম

সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর অবসরকালীন ভাতায় চালান বৃদ্ধাশ্রম! ৯৪ বছরের বৃদ্ধকে কুর্নিশ নেটদুনিয়ার
সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর অবসরকালীন ভাতায় চালান বৃদ্ধাশ্রম! ৯৪ বছরের বৃদ্ধকে কুর্নিশ নেটদুনিয়ার

একসময় সেনাবাহিনীর হয়ে নিজের জান-প্রাণ লড়িয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন৷ । তরুণ বয়সে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে লড়াই করেছিলেন। সংগ্রামের এক পর্বে বুকে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। আহত হওয়ার পর তিনি অবসর নেন৷ আর তারপর থেকে গ্রামে বৃদ্ধাবাস চালিয়ে নজির তৈরি করলেন তামিলনাড়ুর বিরুধুনগর জেলার কুন্থলাপট্টি গ্রামের ৯৪ বছর বয়সি তিরুপতি। এখন শতবর্ষের কাছে পৌঁছে তিনি গ্রামে একটি বৃদ্ধাবাস চালাচ্ছেন, গত ২৫ বছর ধরে।

তিরুপতি জানিয়েছেন, "কাশ্মীর যুদ্ধে আমি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম৷ সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর আমি তামিলনাড়ুতে নিজের শহরে ফিরে আসি৷ তার পর আমি পড়াশোনা করি, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই৷ তার পর কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করি৷ আমার ৭ জন মেয়ে এবং ২৭ জন নাতিনাতনি আছে৷ কিন্তু ১৯৯০ সালে আমার স্ত্রীর মৃত্যুর আমার দেখাশোনা কেউ করেননি৷ আমি ঠিক করি বাড়ি ছেড়ে নিকটবর্তী নার্সিংহোমে নাম নথিভুক্ত করব ৷ বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার পরই এই সিদ্ধান্ত নিই৷ " তার পরই বৃদ্ধাশ্রম তৈরির সিদ্ধান্ত নেন তিরুপতি৷ যেখানে সব সম্প্রদায়ের বৃদ্ধ বৃদ্ধারা থাকতে পারেন৷

নিজের কৃষিজমিতে বাড়ি তৈরি করেন ২০০১ সালে৷ গত ২৫ বছর ধরে একাই বৃদ্ধাশ্রম চালাচ্ছেন তিরুপতি৷ বৃদ্ধাশ্রমের বিপরীতে বাসস্ট্যান্ডও শুরু করাতে চাইছেন তিনি৷ এর জন্য চেষ্টা জারি তাঁর৷ নিজের সামান্য পেনশনের অর্থেই খরচ চালান বৃদ্ধাশ্রমের৷ সেখানকার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য মুক্তহস্তে করা দানও তিনি গ্রহণ করেন৷

নিম্মি নামে এক বৃদ্ধা রান্নাবান্নার কাজ করেন তিরুপতির বৃদ্ধাবাসে৷ তিনি আদতে কেরলের এর্নাকুলামের বাসিন্দা৷ চার বছর আগে ঘর ছাড়তে হয়েছিল পারিবারিক কারণে৷ তার পর থেকে আশ্রয় পেয়েছেন এই বৃদ্ধাশ্রমেই৷ এখন এটাই তাঁর ঘরবাড়ি৷

বৃদ্ধ জানিয়েছেন, ‘‘আমি নিজস্ব জমি বেচে তিন মেয়ে ও চার ছেলের জন্য ১০ লক্ষ করে টাকা সঞ্চয় করে রেখেছি৷ সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ১ লক্ষ টাকা অবসরকালীন ভাতা পাই৷ এছাড়া যুদ্ধে আহত হওয়া বাবদ পেনশন এবং শুল্ক অফিসার হিসেবে পেনশনও আছে৷’’ এভাবেই এখনও এই বৃদ্ধাশ্রম চালিয়ে চলেছেন অবসরপ্রাপ্ত এই সেনাকর্মী৷ তাঁর এই কৃতিত্বকে কুর্নিশ জানিয়েছে গোটা নেটদুনিয়া।