শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

মানবিক উদ্যোগ! পথশিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়ে নজির পুলিশ কর্তার! কুর্নিশ নেটজনতার

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২২, ০৪:০২ পিএম | আপডেট: জুলাই ২৩, ২০২২, ১০:২৭ পিএম

মানবিক উদ্যোগ! পথশিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়ে নজির পুলিশ কর্তার! কুর্নিশ নেটজনতার
মানবিক উদ্যোগ! পথশিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়ে নজির পুলিশ কর্তার! কুর্নিশ নেটজনতার

পুলিশ মানুষের বন্ধু। যে কোনও বিপদে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোই পুলিশের কাজ। তবে শুধু সামাজিক বা প্রশাসনিক কাজকর্মই নয়, সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও যে কোনও প্রয়োজনে প্রায়ই পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এই দেশের প্রশাসন বাহিনী। এবারও ফের দেখা গেল তেমনই এক দৃশ্য। দেশের এক পুলিশ কর্তার হাত ধরে সৃষ্টি হল মানবিকতার এক দৃষ্টান্ত।

সম্প্রতি যোগী রাজ্যের অযোধ্যার এক পুলিশ কর্তার কীর্তি মন ছুঁয়ে নিয়েছে সকলের। তাঁর কর্মকাণ্ডের কথা এখন ভাইরাল নেটদুনিয়ায়। মানবতার এক অনন্য নজির গড়েছেন রঞ্জিত যাদব নামে অযোধ্যা পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টর। তিনি কাঁধে তুলে নিয়েছেন একাধিক দরিদ্র ছেলেমেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব। অযোধ্যার এক রাস্তার ধারে গাছের তলাতেই তিনি খুলেছেন এক পাঠশালা। যেখানে পড়ুয়ারা সকলেই পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়ে। তাদের পড়াশোনার শেখানোর মতো গুরুদায়িত্বই এখন নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন ওই পুলিশকর্তা।

প্রতিদিন নিয়ম করে পুলিশ কাকুর পাঠাশালায় হাজির হয় পড়ুয়ারা৷ তাদের কারও মা অন্যের বাড়ি কাজ করেন, কারও বাবা হয়তো ভিক্ষা করেন, আবার কারও হয়তো পরিবারই নেই। দু‍‍`বেলা দু‍‍`মুঠো খাবারও জোটে না যেখানে, সেখানে তো পড়াশোনা কথা চিন্তা করাই যায় না। কিন্তু তা বলে কি ছোট্ট ছেলেমেয়েরা নিরক্ষর হয়ে থাকবে? নাহ, তা হতে দেননি সাব-ইন্সপেক্টর রঞ্জিত যাদব৷ বরং নিজে পাঠশালা খুলে পড়ুয়াদের পড়াশোনা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। আর কেবল ক্লাস করানোই নয় পড়ুয়াদের বই,খাতা, পেনও কিনে দিয়েছেন এই পুলিশ কর্তা৷

রঞ্জিত যাদবের কথায়, "আমার যখন ছুটি থাকে তখনই এই সকল পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শেখাই। নিয়মিত ক্লাস নিই। বেশ কয়েক মাস ধরেই এই কাজ করে আসছি। আসলে এই সব পড়ুয়াদের বাবা-মাকে খুবই কষ্টে দিন যাপন করেন। কিন্তু তাদের অনেকেই চান সন্তানরা পড়াশোনা শিখুক৷ তাই তাদের পাশে থাকার উদ্যোগ নিয়েছি।"

বলা বাহুল্য, সাব-ইন্সপেক্টর রঞ্জিত যাদবের এই উদ্যোগে সাড়াও মিলেছে বিপুল। ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা এখন একদিনও ক্লাস কামাই করে না৷ বরং দিনে দিনে বাড়ছে পড়ুয়ার সংখ্যা। সবমিলিয়ে এখন প্রায় ৫০জন ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে রঞ্জিত যাদবের পাঠশালায়। পড়ুয়াদের কথায় পুলিশ কাকু এত ভালো পড়ান। আমরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। আর পুলিশ কাকুও তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি।

সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত যাদবের এই কর্মকাণ্ডের কাহিনী ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সহকর্মীরা। নেটদুনিয়ার মানুষও তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। পুলিশ কর্তাটির এমন মানবতা বোধ দেখে অজস্র মানুষ স্যালুটও ঠুঁকেছেন তাঁকে৷ এমন কাজকে সকলেই কুর্নিশ জানিয়েছেন।