রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে লাগাতার ধর্ষণ! পালানোর আগে বাংলা-বিহার সীমান্ত থেকে পাকড়াও অভিযুক্ত

আত্রেয়ী সেন | তনুজ জৈন

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২, ০১:৩০ পিএম | আপডেট: জুন ২২, ২০২২, ০৭:৪০ পিএম

পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে লাগাতার ধর্ষণ! পালানোর আগে বাংলা-বিহার সীমান্ত থেকে পাকড়াও অভিযুক্ত
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে লাগাতার ধর্ষণ! পালানোর আগে বাংলা-বিহার সীমান্ত থেকে পাকড়াও অভিযুক্ত / প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহঃ ফের নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা ঘটল রাজ্যে। ঘুরতে যাওয়ার নাম করে পাট ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে, এক পঞ্চম শ্রেণির প্রতিবেশী নাবালিকাকে ধর্ষণ করল এক যুবক। ওই নাবালিকার উপর লাগাতার যৌন নির্যাতন করা হয় বলেই অভিযোগ। এদিকে, ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত যুবককে।

জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই নাবালিকা মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটল গ্রামের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক ওই নির্যাতিতা নাবালিকাকে এক পাট ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে লাগাতার ধর্ষণ করার পর, সেখানে তাঁকে ফেলেই পালিয়ে যায়। তবে, পরে ওই যুবকের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে তাকে বিহার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম সন্তোষ গোস্বামী ওরফে টিকিয়া, বয়স ৩৮ বছর।  

এই গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভাটল গ্রামের বাসিন্দা ওই পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে পাট ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে ওই প্রতিবেশী যুবক। পরে খবর পেয়ে ওই নাবালিকার পরিবার ছুটে গিয়ে দেখে, পাট ক্ষেতের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাঁদের মেয়ে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশকে।

খবর পাওয়া মাত্রই হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজমেরের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ওই এলাকায় ছুটে যায়। এরপর পুলিশের তত্ত্বাবধানেই ওই রক্তাক্ত নাবালিকাকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি অভিযুক্ত ঐ যুবকের খোঁজে এলাকাজুড়ে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তাঁর কোনও খোঁজ না মেলায়, ওই যুবকের মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করা শুরু করে পুলিশ। অবশেষে মোবাইল নম্বরের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে বাংলা বিহার সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ওই যুবককে গ্রেফতার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ। পুলিশের জেরার মুখে ওই যুবক স্বীকার করে নিয়েছে যে, ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছে সে। 

অন্যদিকে, ধর্ষিতা নাবালিকার মা জানিয়েছেন, ওই যুবক সম্পর্কে তাঁদের দেওর হয়। তাই মেয়েকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের বাড়িতে আসলে পরিবারের কারও বিন্দুমাত্র সন্দেহ হয়নি। কিন্তু ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তাঁরা জানতে পারেন যে,  ওই যুবক তাঁদের মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। 

খোঁজ পেয়েই, তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ‘এলাকার কিছু লোক আমাদেরকে জানান সন্তোষ গোস্বামী আমার মেয়েকে নিয়ে পাট ক্ষেতের ভেতর ঢুকে ছিল। আমরা এলাকার একটি পাটক্ষেত থেকে আমাদের মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করি। আমরা চাই ওই যুবকের উপযুক্ত শাস্তি হোক।’

কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান নুর আজম জানিয়েছেন যে, এলাকায় একটি নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা কথা তিনি জানতে পেরেছেন। তিনিও আইনের মাধ্যমে অভিযুক্ত ওই যুবকের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন। পাশাপাশি ধর্ষিতা নাবালিকা ও তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা আইসি দেওদূত গজমের জানান, অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হবে অভিযুক্তকে।