মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪

লক্ষ্মীপুজোর দিনেই জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা ‘বাড়ির লক্ষ্মী’কে! আটক অভিযুক্ত শ্বশুর-শাশুড়ি

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২২, ০৫:২৩ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২২, ১১:৩৪ পিএম

লক্ষ্মীপুজোর দিনেই জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা ‘বাড়ির লক্ষ্মী’কে! আটক অভিযুক্ত শ্বশুর-শাশুড়ি
লক্ষ্মীপুজোর দিনেই জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা ‘বাড়ির লক্ষ্মী’কে! আটক অভিযুক্ত শ্বশুর-শাশুড়ি / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনেই জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হল বাড়ির লক্ষ্মীকে। অভিযোগের তীর বধূর শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার কাকদ্বীপের হারুউড পয়েন্ট উপকূল থানার প্রসাদপুরে।

পুলিশ সূত্রে খবর, বছর ২০-র মৃতা গৃহবধূর নাম শিউলি পাঁজা। তরুণীকে পুড়িয়ে মামার ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। রবিবারের এই ঘটনায় মৃতার শ্বশুর লক্ষ্মীকান্ত পাঁজা ও শাশুড়ি ঊর্মিলা পাঁজাকে আটক করেছে পুলিশ। পাশাপাশি যে ঘরে ওই গৃহবধূর গায়ে আগুন লেগেছিল, সেই ঘরটি তদন্তের স্বার্থে সিল করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বোঝা যাবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ২ বছর আগে নামখানার সাতমাইলের বাসিন্দা শিউলির সঙ্গে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় প্রসাদপুরের গুরুপদ পাঁজার। গুরুপদ পাঁজা কাজের সূত্রে থাকেন ভিন রাজ্যে। এদিকে, মৃতা তরুণীর বাপের বাড়ির অভিযোগ, গুরুপদ পাঁজা বাড়িতে না থাকার সুযোগে তাঁদের মেয়ের উপরে দিনের পর দিন ধরে অত্যাচার চালাতেন শ্বশুর-শাশুড়ি। এমনকি প্রতিবেশীদেরও অভিযোগ যে, মৃতা বধূকে মারধর করা হত, প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে, বাধ্য হয়ে সম্প্রতি এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান মৃতা গৃহবধূ শিউলি। লক্ষ্মীপুজোর দিনই শ্বশুরবাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি। তার পরেই এই কাণ্ড!

অভিযোগ উঠছে যে, প্রথম দিকে মারধর করে শিউলিকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে দেওয়া হয়। এরপরে তাঁর সারা গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন শ্বশুর-শাশুড়ি। এরপর শিউলির আর্ত চিৎকারে পাড়ার লোকজন ছুটে আসেন। আগুন নিভিয়ে, শিউলিকে উদ্ধার করে দ্রুত কাকদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে যান প্রতিবেশীরাই। কিন্তু তাঁর শরীরের অধিকাংশ অংশই পুড়ে গিয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিউলিকে পরে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সেখানেই রবিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় গৃহবধূ শিউলির।

এদিকে, এই ঘটনায় এখনও থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে এ বিষয়ে সুন্দরবন জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশ। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতের শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর বাকি তদন্ত প্রক্রিয়া হবে।’