বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

মডেলিংয়ের প্রস্তাব, ছাত্রীকে ডাকতেন বাড়িতেও! নাবালিকা অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার ‘ভুয়ো’ অধ্যাপক

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২২, ১১:৩২ এএম | আপডেট: এপ্রিল ১৪, ২০২২, ০৫:৩২ পিএম

মডেলিংয়ের প্রস্তাব, ছাত্রীকে ডাকতেন বাড়িতেও! নাবালিকা অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার ‘ভুয়ো’ অধ্যাপক
মডেলিংয়ের প্রস্তাব, ছাত্রীকে ডাকতেন বাড়িতেও! নাবালিকা অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার ‘ভুয়ো’ অধ্যাপক / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বেথুন কলেজের প্রফেসর বলে নিজেকে দাবি করেছিলেন এক ব্যক্তি। এক নাবালিকা ছাত্রীর পড়াশোনায় সমস্ত রকমের সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দেন ছাত্রীর পরিবারকে। পাশাপাশি মডেলিংয়ে সুযোগ করে দেওয়ার টোপও দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি ছাত্রীর পরিবারের। কিন্তু হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় ওই নাবালিকা। পরে পুলিশি তৎপরতায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। ঘটনার জেরে গ্রেফতার করা হয় ‘ভুয়ো’ অধ্যাপককে।

জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ‘ভুয়ো’ অধ্যাপকের নাম প্রতিম দাস। ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুরের অন্তর্গত রামনগর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, প্রতিমের সঙ্গে নাবালিকার সোশ্যাল মিডিয়া মারফত পরিচয়। নাবালিকার পরিবারের দাবি, ধৃত নিজেকে পলাশপ্রতিম বৈদ্য নামে পরিচয় দিয়েছিলেন। এমনকি এটাও জানিয়েছিলেন যে তিনি বেথুন কলেজের অধ্যাপক। এছাড়াও প্রতিমের সঙ্গে ওই ছাত্রী তাঁর পরিবারের কথাও বলিয়েছিলেন।

ছাত্রীর পরিবারের দাবি অনুযায়ী প্রতিম তাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে নাবালিকার পড়াশোনায় কোনও অসুবিধা হবেনা। প্রসঙ্গত প্রতিমের কথার ওপর ভিত্তি করেই ওই নাবালিকা বেথুন কলেজের হোস্টেলে থাকা শুরু করে। এই বিষয়ে প্রতিম নাবালিকার পরিবারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যাতে তাঁরা কাউকে কিছু না বলেন। এমনকি ব্যাপারটা জানাজানি হলে ক্ষতি হতে পারে এমনটাও হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

পরিবারের সদস্যরা আরও দাবি করেন যে, বেথুন কলেজের হোস্টেল থেকে ওই নাবালিকাকে প্রায়শই বাড়িতে ডেকে পাঠাতেন অভিযুক্ত। তাঁকে নিজের বাড়িতে রেখে মডেলিংয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। বেথুন কলেজে প্রায়শই যাতায়াত থাকায় ছাত্রী তখনও প্রতিমের আসল পরিচয় সম্পর্কে অবগত হতে পারেননি। এমনকি কোভিড পরিস্থিতির মাঝে দীর্ঘদিন অনলাইন ক্লাস জারি থাকায় ছাত্রীটির মনে প্রতিমের আসল পরিচয় নিয়ে কোনওরকম প্রশ্নও জাগেনি। এছাড়াও তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝেমধ্যেই ছাত্রীটি বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে যেত। তাঁদের দাবি, প্রতিম ওই টাকা-পয়সাও আত্মসাৎ করেছে।

ছাত্রীর পরিবারের দাবি, গত বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎই তাঁরা তাঁদের পরিবারের মেয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে উঠতে পারছিলেন না। এমনকি প্রতিমকে ফোন করাতে তার ফোনও নট রিচেবল বলছিল। বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যরা বেথুন কলেজে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে ওই কলেজে পলাশপ্রতিম বৈদ্য নামে কোনও অধ্যাপক নেই। বেগতিক বুঝে মঙ্গলবার বারুইপুর মহিলা থানায় পলাশ প্রতিম বৈদ্যর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত।

ঘটনা তদন্ত শুরু করার পর নাবালিকার মোবাইল টাওয়ার লোকেট করে বারুইপুর মহিলা থানার পুলিশ। এরপর মঙ্গলবার রাতেই নাবালিকাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকার সঙ্গেই ছিলেন প্রতিম। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমকেও গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনায় অভিযুক্তর পক্ষ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। পুলিশ তদন্তে প্রতিমের আসল পরিচয় জানার চেষ্টা করছে।