শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের ছায়া এবার উত্তরপ্রদেশে! প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে ৬ টুকরো করল যুবক

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২২, ১২:১৮ পিএম | আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২২, ০৬:৩৬ পিএম

শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের ছায়া এবার উত্তরপ্রদেশে! প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে ৬ টুকরো করল যুবক
শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের ছায়া এবার উত্তরপ্রদেশে! প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে ৬ টুকরো করল যুবক

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের ছায়া এবার যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে। দিল্লিতে যেভাবে লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধা ওয়াকারকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পড়ে দেহ ৩৫ টুকরো করেছিল প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা, ঠিক সেভাবেই উত্তরপ্রদেশের প্রিন্স যাদবও তার প্রাক্তন প্রেমিকাকে ৬ টুকরো করে, তাঁর দেহ ফেলে দিয়েছিল কুয়োতে এবং একটি পুকুরে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার উত্তরপ্রদেশের আজমগড় থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত প্রিন্স যাদবকে। ওই অঞ্চলেই একটি কুয়ো থেকে এক যুবতীর খণ্ডবিখণ্ড দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, আর পাশের এক পুকুর থেকে ওই যুবতীর কাটা মাথা উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, গত ১৫ নভেম্বর আজমগড়ের পশ্চিমী গ্রামের একটি কুয়োতে এক যুবতীর খণ্ডবিখণ্ড দেহ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরেই প্রথমে বিষয়টি পড়ে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অর্ধনগ্ন অবস্থায় ওই যুবতীর দেহের ৬ টি টুকরো উদ্ধার করে। এরপরই শুরু হয় তদন্ত। পাশেরই একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় কাটা মাথা। আজমগড়ের পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট অনুরাগ আর্য জানিয়েছেন যে, মৃত ওই যুবতীকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। মৃত যুবতীর নাম আরাধনা। দেহটি দুই-তিনদিন আগের হওয়ায়, তাতে পচন ধরে গিয়েছিল।

এরপরই তদন্ত শুরু করে প্রিন্স যাদব নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি জেয়ার অভিযুক্ত যুবক স্বীকার করে নিয়েছে যে, ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে অন্য এক ব্যক্তিকে বিয়ে করার কারণেই সে পরিবারের সাহায্য নিয়ে প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করে এবং দেহ ৬ টুকরো করে কুয়োতে ফেলে দেয়।

অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রে এও জানা গিয়েছে যে, শনিবার অভিযুক্ত প্রিন্স যাদবকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু সে একটি দেশি পিস্তল জোগাড় করে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশের উপরে গুলিও চালায়। উভয়পক্ষের মধ্যে শুরু হয় গুলির লড়াই। এই লড়াইয়ে প্রিন্সের পায়ে গুলি লাগে। চিকিৎসার পরে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। এরপরই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশি জেরায় সে জানিয়েছে যে, আরাধনার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেই তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায় এবং অন্য এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে আরাধনা। সেই সময় থেকেই আরাধনার প্রতি তার মনে রাগ ছিল।

এদিকে এর মধ্যে সম্প্রতি ফের আরাধনার সঙ্গে প্রিন্সের যোগাযোগ হয়। ইশাকপুর গ্রামের বাসিন্দা আরাধনাকে দেখা করতে বলে প্রিন্স। গত ৯ নভেম্বর বাইকে করে আরাধনাকে একটি মন্দিরে নিয়ে যায় সে। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল প্রিন্সের খুড়তুতো ভাই সর্বেশ। দুইজনে মিলে আরাধনাকে পাশের একটি আখের ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে গলা টিপে খুন করে। তারপরে তাঁর দেহ ৬ টুকরো করে। কালো পলিথিনে সেই দেহাংশ ভোরে পশ্চিমী গ্রামের একটি কুয়োয় ফেলে দেয়। কাটা মাথাটি ফেলে দেয় পাশের একটি পুকুরে।

পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, অভিযুক্তের কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল, কার্তুজ ও একটি ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত প্রিন্সকে গ্রেফতার করা হলেও, পরিবারের অন্যান্য অভিযুক্তরা- সর্বেশ, প্রমিলা যাদব, সুমন, রাজারাম, কলাবতী, মঞ্জু ও শীলা যাদব এখনও পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়েছে।