বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪

সুশান্ত-এর মৃত্যুর নেপথ্যে কী কারণ? দু’বছর পরেও তাঁর ‘ডেথ মিস্ট্রি’ নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২, ০৩:৫১ পিএম | আপডেট: জুন ১৪, ২০২২, ০৯:৫১ পিএম

সুশান্ত-এর মৃত্যুর নেপথ্যে কী কারণ? দু’বছর পরেও তাঁর ‘ডেথ মিস্ট্রি’ নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত
সুশান্ত-এর মৃত্যুর নেপথ্যে কী কারণ? দু’বছর পরেও তাঁর ‘ডেথ মিস্ট্রি’ নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ১৪ জুন, ২০২২। আজ থেকে ঠিক দু‍‍`বছর আগে চির নিদ্রায় নিদ্রিত হয়েছিলেন বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। মুম্বইয়ের বান্দ্রার একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর ঝুলন্ত দেহ। সেদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেছিলেন তিনি। খেয়েছিলেন জলখাবারও। কিন্তু তার কিছু মুহূর্ত পরেই এক নিমিষে শেষ হয়ে যায় একটি জলজ্যান্ত প্রাণ। অভিনেতার মৃত্যু যেন এক প্রকার নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। শোকের ছায়া নেমে এসেছিল তাঁর পরিবার, ভক্তকুল এবং বলি ইন্ডাস্ট্রির উপর।

সুশান্তের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উঠে এসেছিল একের পর এক প্রশ্ন। যদিও মুম্বই পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, আত্মহত্যাই করেছেন অভিনেতা। কিন্তু এরপর ২০২০ সালের অগস্ট মাসে সুশান্তের মৃত্যু মামলার দায়ভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে ন্যস্ত করা হয়। মুম্বইয়ে টানা এক সপ্তাহ চলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু এরপর আচমকাই তদন্তকার্যে যেন ভাটা পড়ে। অভিনেতা মৃত্যুর পর দু’বছর অতিক্রান্ত হলেও তাঁর মৃত্যু মামলা যে কতটা এগিয়েছে তা আজও কেউ জানতে পারেনি।

১৪ জুন অভিনেতার মৃত্যুর পর দেহ ময়নাতদন্ত হয় মুম্বইয়ের কুপার হাসপাতালে। এর ঠিক পরের দিন অর্থাৎ ১৫ জুন মুম্বইয়ের পবনহংস শ্মশানে সম্পন্ন হয় সুশান্তের অন্ত্যোষ্টিকার্য। এরপরই তাঁর মৃত্যু ঘিরে উঠতে থাকে একের পর এক প্রশ্ন। একের পর এক ছবি ফ্লপ, বড় বড় প্রজেক্ট হাতছাড়া হওয়া নাকি সম্পর্কের টানাপোড়েনের জের? নাকি তাঁর মৃত্যুর পেছনে রয়েছে কোনও খুনের তত্ত্ব? কেন মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই চলে যেতে হল তরুণ অভিনেতাকে? এই সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন সুশান্তের বাবা কেকে  সিং। সেইমতো আগস্ট মাস থেকে শুরু হয় সিবিআই তদন্ত।

এরপর ২০২০-র ২৯ জুলাই সুশান্ত সিং মৃত্যু মামলায় আসে নয়া মোড়। অভিনেতার ব্যাঙ্কে জমানো অর্থের লেনদেন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুলে সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী সহ ছ‍‍`জনের বিরুদ্ধে পটনার রাজীব নগর থানায় এফআইআর দায়ের করেন কেকে সিং। প্রশ্ন ওঠে, অভিনেতার ব্যাঙ্কে জমানো কোটি কোটি টাকা কোথায় গেল? সন্দেহের তীর প্রথমেই রিয়া চক্রবর্তীর দিকেই যায়। এরপর বিষয়টি পৌঁছয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি পর্যন্ত।

ইতিমধ্যেই উঠে আসে আরও একটি তথ্য। মাদক সরবরাহ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় রিয়া চক্রবর্তীকে। রেহাই পাননি রিয়ার ভাই সৌভিক চক্রবর্তীও। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরেও কোনও তথ্য-প্রমাণ না মেলায় বাধ্য হয়ে মুক্তি দেওয়া হয় রিয়া ও সৌভিককে। অন্যদিকে রিয়ার বিরুদ্ধে টাকা লেনদেনের বিষয়েও মেলেনা কোনও প্রমাণ। তাই সব মিলিয়ে সুশান্ত সিং মৃত্যু মামলায় ছাড়া পেয়ে যান রিয়া চক্রবর্তী। যদিও সেসব এখন অতীত। বর্তমানে প্রত্যেকেই ফিরেছেন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে। নতুন করে কাজ শুরু করেছেন রিয়াও।

কিন্তু অভিনেতার মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি খুন? সেই বিষয়ে এখনও কেন কিছু জানাল না সিবিআই? জানা গিয়েছে, গত বছর ডিসেম্বর মাসেই সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার তদন্ত শেষ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এরপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ছ’মাস। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে এখনও কোনও রিপোর্ট প্রকাশিত না হওয়ায় অভিনেতার রহস্যমৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গিয়েছে।