বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪

ফের স্বাস্থ্যের অবনতি বর্ষীয়ান ও কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালকের! ভেন্টিলশনে তরুণ মজুমদার

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২২, ০৪:৩৭ পিএম | আপডেট: জুলাই ৩, ২০২২, ১০:৩৭ পিএম

ফের স্বাস্থ্যের অবনতি বর্ষীয়ান ও কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালকের! ভেন্টিলশনে তরুণ মজুমদার
ফের স্বাস্থ্যের অবনতি বর্ষীয়ান ও কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালকের! ভেন্টিলশনে তরুণ মজুমদার

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আবারও স্বাস্থ্যের অবনতি হল বর্ষীয়ান ও কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদারকে। ভেন্টিলশনে দিতে হয়েছে এই প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিচালককে। হাসপাতাল সূত্রে খবর পরিচালকের সেকেন্ডারি ইনফেকশন হয়েছে। তাঁর ডায়ালিসিস চলছে বলেও জানা গিয়েছে। 

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আচমকাই পরিচালকের সেকেন্ডারি ইনফেকশন হওয়ায় পরিচালকের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। গত শুক্রবারই মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা প্রবীণ এই পরিচালককে যখন পরীক্ষা করেছিলেন, তখনও তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু শনিবার থেকে ফের একবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। শুক্রবার পরিচালকের এন্ডোস্কপি করা হয়। সেদিন পরিচালকের রক্তচাপ নিচের দিকে ছিল বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি পরিচালকের প্লেটলেট কাউন্ট বেড়েছিল। 

উল্লেখ্য, গত ২২ বছর ধরেই কিডনির অসুখে ভুগছেন পরিচালক। গত সপ্তাহেই কিডনির সমস্যা নিয়েই এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও তাঁর ফুসফুসের সমস্যা ও ডায়াবেটিস রয়েছে। চেস্ট মেডিসিনের চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ড এবং মেডিসিনের চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ, নেফ্রলজিস্ট অর্পিতা রায়চৌধুরী, কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসক বিমান রায়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল সবসময় তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। পরিচালকের হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। 

বাংলা চলচ্চিত্রের এই প্রখ্যাত পরিচালকের জন্ম ব্রিটিশশাসিত ভারতে। তাঁর বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। নাম বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার। বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও, চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি তাঁর ঝোঁক তৈরি হয় একসময়। অপর দুই চলচ্চিত্র পরিচালক শচীন মুখোপাধ্যায় এবং দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোট বেঁধে ‘যাত্রিক’ নামে চলচ্চিত্র পরিচালনার কাজ শুরু করেন। এই ত্রয়ীর পরিচালনায় প্রথম ১৯৫৯ সালে মুক্তি পায় ‘চাওয়া পাওয়া’ চলচ্চিত্রটি। সেই সুপারহিট চলচ্চিত্রের অভিনয়ে ছিলেন চীরসবুজ জুটি উত্তম-সুচিত্রা। ১৯৬০ সালে বানালেন ‘স্মৃতি টুকু থাক‍’। এই যাত্রিকের পরিচালনাতেই ১৯৬২ সালে নির্মিত হয় জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কাঁচের স্বর্গ’। 

তবে, এর কয়েক বছর পরেই ১৯৬৫ সালে ‘যাত্রিক’ থেকে বেরিয়ে আসেন তরুণ মজুমদার। সেই বছরই তিনি আলোর পিপাসা’ এবং ‘একটুকু ভালবাসা’ নামের দু’টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এরপর থেমে থাকেননি। একের পর এক সুপারহিট বাংলা ছবি দর্শককে উপহার দিয়েছেন। সেইসব চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘বালিকা বধূ’, ‘কুহেলি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘আপন আমার আপন’, ‘গণদেবতা’, ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আলো’র মতো সিনেমা।

তাপস পাল, মহুয়া রায়চৌধুরী, অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের মতো বাংলার তাবড় তাবড় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রথম অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গেও ২০টি ছবি বানিয়েছেন তিনি। করোনাকালে লকডাউনে পরিচালক তরুণ মজুমদার আবারও বই এবং চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেছিলেন।

নিজের দীর্ঘ কর্মজীবনে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছেন এহেন প্রখ্যাত ও কিংবদন্তি পরিচালক। ১৯৯০ সালে পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মানও। তাঁর অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই চিন্তিত তাঁর অনুরাগীরা। সকেলেরই বিশ্বাস ছিল তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু ফের তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় উদ্বিগ্ন অনুরাগীরা।