সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

শোভন-শুভেন্দু বাকযুদ্ধে এবার ময়দানে বৈশাখী! বিরোধী দলনেতার ‘ভাঁড়’ কটাক্ষের পাল্টা দিলেন

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২২, ১২:১৫ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২২, ০৬:১৫ পিএম

শোভন-শুভেন্দু বাকযুদ্ধে এবার ময়দানে বৈশাখী! বিরোধী দলনেতার ‘ভাঁড়’ কটাক্ষের পাল্টা দিলেন
শোভন-শুভেন্দু বাকযুদ্ধে এবার ময়দানে বৈশাখী! বিরোধী দলনেতার ‘ভাঁড়’ কটাক্ষের পাল্টা দিলেন

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ভিডিও বার্তায় আক্রমণ করেছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এর জবাব দিতে দেরি করেননি শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা সংবাদ মাধ্যমে শোভনকে ভাঁড় বলে কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা। এবার শোভনের হয়ে এই বাকযুদ্ধে আসরে নামলেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে ভণ্ড- ভাঁওতাবাজ কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন শুভেন্দুর উদ্দেশে।

উল্লেখ্য, দুদিন আগে নন্দীগ্রাম অভিযান নিয়ে সংবাদমাধ্যমে শুভেন্দু বলেছিলেন যে, অধিকারী বাড়িতে এসেছিলেন বলেও মমতা মুখ্যমন্ত্রী হতে পেরেছেন। না হলে দিদি থেকে দিদিমা হয়ে যেতেন। এরপরেই মমতার হয়ে ময়দানে নেমে শোভন চট্টোপাধ্যায় শুভেন্দুকে একহাত নেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় কানন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন। সেখানে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ করেন। এর পাল্টা জবাবে শোভনের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন যে, ওই ভাঁড়েদের কথার কী গুরুত্ব আছে! এবার শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জবাব দিলেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখী।

ফেসবুকে ঠিক কী লিখেছেন বৈশাখী? বৈশাখী শুভেন্দুর ‘ভাঁড়’ মন্তব্যের জবাবে লিখেছেন, ‘ভণ্ডামি আর ভাঁওতাবাজির থেকে ভাঁড়ামি ভাল।’ নাম না করেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে কাঁথির অধিকারী পরিবারের বিরাট ভূমিকা ছিল বলে দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথিতে তাঁদের বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ তৃণমূল সুপ্রিমোর নবান্ন দখলের পথ মসৃণ করেছিল বলেই দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা। তবে, এটা নতুন কোনও দাবি নয়। একুশের নির্বাচনের আগে, বিশেষ করে যেদিন থেকে তিনি দল পরিবর্তন করেছেন, সেই সময় থেকেই তিনি প্রকাশ্যে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এই দাবিই করেছেন। এবারও সেই কথাই বলেছেন। রবিবার লক্ষ্মীপুজোর দিন শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তো এই বাড়ি থেকে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলি চলে। ২০০৮ সালের ১৩ মার্চ তিনি এই বাড়ির ছাদেই ছিলেন। নন্দীগ্রাম আন্দোলন না হলে তিনি তিনি দিদি থেকে দিদিমা হতেন। কোনওদিন মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না।’

এদিকে, প্রিয় দিদি তথা মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে এমন শব্দবন্ধ প্রয়োগে বেজায় ক্ষিপ্ত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ কানন ওরফে শোভন চট্টোপাধ্যায়। শুভেন্দুর মন্তব্যের পরে, ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় শুভেন্দুকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শোভন। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নন্দীগ্রামে দিনের পর দিন যখন অত্যাচার চলছিল তখন তার আগে বা পরে আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন? নন্দীগ্রাম আন্দোলনে আপনি ছিলেন? আপনি বলছেন শান্তিকুঞ্জের মাটি নিয়ে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন দখল করেছেন। আপনি বিকৃত তথ্য পরিবেশন করছেন।’

এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, ‘এক শহিদের মা ছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়িকা। তাঁকে সরিয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে আপনাকে দাঁড় করিয়েছিলেন। আপনাকে বিধানসভায় এনেছিলেন, মন্ত্রিসভায় এনেছিলেন। আপনি আজ সব অস্বীকার করবেন? সৃষ্টি যদি স্রষ্টাকে অস্বীকার করে স্রষ্টার তাতে কোনও ক্ষতি হয় না। মমতা ব্যানার্জি চুপ করে আছেন বলে ভাববেন না বাংলার মানুষও চুপ করে তা সহ্য করছেন। বাংলার মানুষ ইতিহাসটা কিন্তু সম্পূর্ণ জানেন।’

অন্যদিকে, শোভনের এই ভিডিও বার্তার পরেই তাঁকে ভাঁড় বলে কটাক্ষ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। যার জবাব এবার দিলেন শোভনের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।