সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহ অব্যাহত! এবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন এই BJP বিধায়ক

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২২, ০৪:৩০ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২২, ১০:৩৯ পিএম

বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহ অব্যাহত! এবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন এই BJP বিধায়ক
বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহ অব্যাহত! এবার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন এই BJP বিধায়ক / প্রতীকী ছবি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ প্রথম নয়, অনেকদিন ধরেই বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহের সুর বাজছে। একের পর এক বিধায়ক এবং নেতারা বিদ্রোহ দেখাচ্ছেন দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। যা ক্রমাগত অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলের। বিশেষ করে একুশের নির্বাচন এবং তার পরে উপনির্বাচন এবং পুর ভোটের পর সেই বিদ্রোহ আরও তীব্র হয়েছে। দলের অনেকেই শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। অনেকেই নির্বাচনে হারের জন্য দায় চাপাচ্ছেন শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের উপর। এবার যেমন আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর খোদ ‘বেসুরো’ ছিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। রাজ্যের দুই উপনির্বাচনে হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কাছে। তারপরই রবিবার বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষ। অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। তবে, শুধু গৌরী শঙ্কর নন, রাজ্য কমিটির সদস্য পদত্যাগ করেছেন রাজ্য কমিটির আরও দুই সদস্য। এই তালিকায় রয়েছেন বহরমপুরের বিধায়ক কাঞ্চন মৈত্র এবং বাণী গঙ্গোপাধ্যায়। এখানেই থেমে নেই। এর পরপরই রবিবারই পদ ছাড়েন নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার ১০ বিজেপি নেতা। ইতিমধ্যেই তাঁরা তাঁদের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বকে। সেই ধারা থেমে নেই। এবার এরই রেশ দেখা গেল শিলিগুড়িতে। বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এখানেই শেষ নয়, বিজেপির অবজারভার গ্রুপ থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিলেন। 

শিলিগুড়ির বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি তিনি শিলিগুড়ির বিজেপি সংগঠন দেখার দায়িত্বেও ছিলেন। সেই তিনিই এবার বিজেপির পর্যবেক্ষকদের নিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সোমবার শুরু হয়েছে জোর চর্চা জেলার রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি নেতাদের এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার হিড়িক পরে গিয়েছে। সেই হিড়িকে এবার নাম লেখালেন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন যে, ‘অবাঞ্ছিত গ্রুপে থাকার ফলে সমস্যা হচ্ছে।’ তাই এই সিদ্ধান্ত। যদিও তিনি এও স্পষ্ট করেছেন যে, তাঁর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর আরও দাবি যে, তিনি হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটিতে বিশ্বাসী নন।

উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই শঙ্কর ঘোষ সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর ভোটে তাঁর রাজনৈতিক গুরু অশোক ভট্টাচার্যকে হারিয়ে শিলিগুড়ির বিধায়ক হন। সেই সময় জেলা ও রাজ্য বিজেপি-র একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সঙ্গের যুক্ত হন তিনি। সেই একাধিক গ্রুপের মধ্যে একটি গ্রুপ থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছেন। 

এদিকে, বিগত কয়েকদিন ধরে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে চলা অশান্তির প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের দাবি, ‘আমাদের বহু গ্রুপ তৈরি করে দেওয়া হয়। কর্মসূত্রে আরও কিছু গ্রুপে অ্যাড হতে হয়। তবে এমন কিছু অবাঞ্ছিত গ্রুপে থাকার ফলে মূল খবর বা ইনফরমেশন চোখের আড়াল হয়ে যায়। কাজেই সেই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যাওয়া ভাল। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই। দলের বাকি গ্রুপগুলোতে আমি রয়েছি।’

অন্যদিকে, তিনি এও জানিয়েছেন যে, এর আগেও তিনি বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। তাই এই ঘটনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছুই নয়। এই গ্রুপ ছাড়ার মধ্যে দিয়ে কাউকে কোনও বার্তা দেওয়ার কিছু নেই বলেও তিনি জানিয়েছেন।

বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এই গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে আসা প্রসঙ্গে কৌশলে উত্তর দিয়ে বিতর্ক এড়াতে চাইলেও, রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকজন বিধায়ক এবং নেতা এই মুহূর্তে কলকাতায়। তাঁদের অনেকেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কেউ কেউ তো সরাসরি দল পরিচালনা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। একের পর এক বিধায়ক, সাংসদ এবং বিজেপি নেতাদের গলায় এই বিদ্রোহের সুর এবং দলের নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ ক্রমশ দলের অন্দরের সমস্যাকে আরও জোরালো করছে।