সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

চিন্তন বৈঠকে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ! কী বললেন তিনি?

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২২, ০১:০১ পিএম | আপডেট: মার্চ ৬, ২০২২, ০১:৩১ পিএম

চিন্তন বৈঠকে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ! কী বললেন তিনি?
চিন্তন বৈঠকে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ! কী বললেন তিনি?

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ চিন্তন বৈঠকে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে এবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন নাম না করে লকেটকে খোঁচা দিলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া আত্মবিশ্লেষণ নয়। পরচর্চা।’

আসলে শনিবার ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে আয়োজিত হয় বিজেপির চিন্তন বৈঠক। যেখানে সাম্প্রতিকের বিজেপির নির্বাচনের ধরাশায়ী ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনায় বসে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এই বৈঠকে প্রধানত আত্মবিশ্লেষণের উপরেই জোর দেওয়া হয়। এই বৈঠকেই লকেটের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। 

লকেট নাম না করে দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে কটাক্ষ করে বলেন যে, ‘মঞ্চে বলবেন, কিন্তু কাজের লোককে বাদ দিয়ে কাছের লোককে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেবেন।’ লকেটের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই রবিবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘চিন্তন বৈঠকে সবাই নিজের মতামত রেখেছে। আত্মবিশ্লেষণের জন্যই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে কী করে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে? নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপান কখনই আত্মবিশ্লেষণ হতে পারে না। ওটাকে পরচর্চা।’  এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও সংযোজন, ‘যারা ময়দানে নেই, তাঁরা যদি এই ধরনের অভিযোগ করেন তাহলে কী হবে? যারা ময়দানে ছিলেন তাঁরা জানেন লড়াইটা কতটা কঠিন।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর, শোচনীয় অবস্থা বঙ্গ বিজেপির। এরপর পুরভোটে আরও খারাপ অবস্থা সামনে আসে বিজেপির। রাজ্যের ১০৮ পুরসভার নির্বাচনে বিজেপির কঙ্কালসার চেহারা সামনে বেরিয়ে আসে। পুরসভার ভোটে একেবারেই দাগ কাটতে পারল না শুভেন্দু-সুকান্ত-দিলীপের বঙ্গ বিজেপি। ১০৮ পুরসভার ভোটে সিপিএম দাগ কাটতে পারলেও, বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়ল। 

যে বিজেপি উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ১৮ আসনে জিতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল। বঙ্গ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল। একুশের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার দাবিও করছিল। তাঁদের সেই দাবীর উপর ভরসা করেই অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছিল। কিন্তু সেই বিজেপির স্বপ্ন একুশের বিধানসভা নির্বাচনেই ধূলিসাৎ হয়ে গেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রীতিমতো হার মানতে হল মোদী-শাহকে। ক্ষমতায় এল সেই জোড়াফুল শিবির। বিজেপির ভরাডুবির পর যারা তৃণমূল ছেড়েছিল, তাঁরা ফের ফিরে আসে তৃণমূলে। 

এদিকে, এই ভরাডুবির চাপ নিতে পারছে না বিজেপি। তার সঙ্গে একের পর এক নেতার বিজেপি ছেড়ে যাওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব তা মানতে নারাজ। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।  পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ বলছেন, রাজ্যবাসীকে সঠিকভাবে ভরসা জোগাতে পারেনি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্যের জেরে বিজেপির অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই কাল হয়েছে। 

এই পরিস্থিতিতে কি আদৌ বিজেপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে রাজনৈতিক অন্দরের আনাচা-কানাচে। এদিকে, দলের ভিতরের কোন্দল সেই সম্ভাবনাকে আরও ক্ষীণ করে তুলছে।